খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি নেই, উদ্বিগ্ন মেডিকেল বোর্ড

সংগৃহীত ছবি

গেলো ২৭ দিন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন বিএনপি’র চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার শারীরিক পরিস্থিতির কোনো উন্নতি নেই। সিরোটিক লিভারের কারণে তার ছেড়ে ছেড়ে জ্বর আসে, বমি হয়, তেমন কিছু খেতে পারছেন না। চিকিৎসকেরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ রেখেছেন বিএনপি প্রধানকে।

এ বিষয়ে বিএনপির প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘গত ২৫ দিন হলো বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে নিশ্চয়ই বাসা চলে আসতেন। যেহেতু তিনি বাসায় আসতে পারছেন না, সেহেতু ধরে নিতে হবে, তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে।’

গতকাল বিকেলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে তার চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে জাহিদ হোসেন জানান। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে আরো নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন বলে চিকিৎসকেরা মনে করছেন। তবে তাকে আরও কত দিন হাসপাতালে থাকতে হবে, সে ব্যাপারে মেডিকেল বোর্ড এ মুহূর্তে সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না।

মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার শরীরে খনিজের অসমতা দেখা দিয়েছে। ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমেছে। পেটে পানি বেড়েছে, ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স দেখা দিয়েছে। এ কারণে ঘুম হচ্ছে না। কয়েকদিন ধরে অবস্থার অবনতি হচ্ছে। বোর্ড নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে।’

‘খালেদা জিয়ার লিভারের সমস্যা জটিল হচ্ছে। আসলে এর শতভাগ চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়। বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রেশার, ডায়াবেটিসসহ স্বাস্থ্যের প্রায় সব প্যারামিটারই ওঠানামা করছে। অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে তা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। গত দুই দিনে অনেক টেস্ট করা হয়েছে। বোর্ড কয়েকটির রেজাল্ট দেখে উদ্বিগ্ন’— বলেন ওই চিকিৎসক।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে খালেদা জিয়ার ছোট পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান ঢাকায় আসবেন শাশুড়ির সেবা-শুশ্রূষার জন্য।

২৫ দিন ধরে রাজধানী এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। নানা শারীরিক জটিলতা নিয়ে গত ৯ আগস্ট হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদ?রোগে ভুগছেন। পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণের পাশাপাশি তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠাতে একাধিকবার পরামর্শও দেয় মেডিক্যাল বোর্ড।