বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরেন এবং দাবি করেন, আজ জীবন যন্ত্রণায় ভুগছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সারা জাতি ‘গণতন্ত্রের প্রতীক, স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্বের প্রতীক’ খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে শঙ্কিত।
আজ ঢাকা জেলায় বিএনপির উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসনকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাতে জিঞ্জিরা বিএনপি কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য উল্লেখযোগ্য আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে স্বীকার করে বিএনপির এই সিনিয়র বলেন, আমরা বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য তেমন কিছুই করতে পারিনি। আমাদের আরও জোরালো আন্দোলন করতে হবে।
যারা বাংলাদেশকে নতজানু করতে চায় এবং যারা বাংলাদেশকে গণতন্ত্রহীন করতে চায় তারা খালেদা জিয়াকে সহ্য করবে, কেন বেগম জিয়া সরকারের লক্ষ্য তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রিজভী বলেন। ফলস্বরূপ, তারা তাদের প্রভু, তাদের প্রতিনিধিদের কাছে জিম্মি হয়েছে, যারা তাদের অফিসে বসিয়েছে এবং আদালতের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে ফ্যাসিবাদী একনায়কত্ব ব্যবহার করেছে।
কারাগারে খালেদা জিয়ার খাবারের সঙ্গে কিছু মেশানো হয়েছে কিনা এমন সন্দেহ করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আমরা দেখলাম বেগম জিয়াকে যখন কারাগারে নেওয়া হয়, তখন তিনি কতটা স্বাভাবিক ছিলেন। কিন্তু তিনি আজ গুরুতর অসুস্থ কেন? সরকার কারগারের মধ্যে তার খাবারের মধ্যে কোনো কিছু মিশিয়েছেন কিনা, এটা নিয়ে জনগণ আজকে সন্দিহান।
‘আমাকে ক্ষমতা থেকে সরানের চেষ্টা করা হচ্ছে’— প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, আপনাকে ক্ষমতায় আনা ও রাখার দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের। আপনি তো জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। তারা যাতে সুষ্ঠু ভোটে অংশগ্রহণ করতে না পারে।
জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু নিয়ে রিজভী বলেন, বিশিষ্ট ইসলামিক ভাষ্যকার ও চিন্তাবিদ দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু নিয়েও একটা রহস্য দানা বেঁধেছে। কেন ১৫ আগস্টের প্রাক্কালে তিনি মারা গেলেন হার্ট অ্যাটাকে? এটা নিয়ে অনেকেই বলছেন— একটা সন্দেহ তো দানা বাঁধেই। দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী সাহেব হঠাৎ করে সুস্থ মানুষ হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেলেন!
তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তিরা যে ডাক্তাররা সাঈদীর ফাঁসির জন্য স্লোগান দিয়েছেন, তাদেরই নিয়োজিত রাখা হয়েছিল তার চিকিৎসার জন্য। এটা কি সন্দেহ করার কারণ হতে পারে না?
রিজভী বলেন, জনগণের কাছে শেখ হাসিনা ওয়াদা করেছিলেন, যারা এরশাদের অধীনে নির্বাচন করবে, তারা জাতীয় বেইমান। পরে তিনি সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন, বেগম জিয়া কিন্তু করেননি। এটাই বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার মধ্যে পার্থক্য।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসন বিশেষ সরকার অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিমউদ্দিন মাস্টার, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে তিনি পরে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আহ্বান জানিয়ে কেরানীগঞ্জের পাড়া-মহল্লায় প্রচারপত্র তুলে দেন।