বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কিছুদিন হাসপাতালেই থাকতে হবে

রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ভর্তি করা হয়েছে। আজ শনিবার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

রাত পৌনে ১০টার দিকে তার শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার চিকিৎসক বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন কথা বলেন।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সপ্তম বারের মতো এ হাসপাতালে এসেছেন। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে উনার পরীক্ষা করা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তক্রমে ম্যাডামকে ভর্তি করানো হয়েছে। উনার অনেককিছু পরীক্ষা যেগুলো বাসায় করা সম্ভব না, মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সেসব পরীক্ষা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ইনশাআল্লাহ হয়ে যাবে। পরীক্ষার পরবর্তীতে মেডিকেল বোর্ড রিপোর্ট পরীক্ষা করে পর্যালোচনা করে উনার চিকিৎসা দেবেন।

জাহিদ হোসেন বলেন, কিছুদিন ধরে উনার লিভারের জটিলতা ছিল। সেটা আছে। ওনার হার্টের জটিলতা ছিল। সর্বোপরি বাহিরে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য এখানকার মেডিকেল বোর্ড পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু কেন নিতে পারেননি সেটা আপনারাও জানেন, দেশবাসীও জানে। যেহেতু ওনার সঠিক চিকিৎসা করা যাচ্ছে না তাই ওনাকে এখানে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, উনার সবশেষ আর কি সুযোগ আছে চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে, সে বিষয় নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে এখানে। যাতে উনার অবস্থা খারাপের দিকে না যায়। সেজন্য পরীক্ষার পরে একটি ধারণা নিয়ে মেডিকেল বোর্ডের আলোচনা করে পরবর্তীতে কি করণীয়।

এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘চিকিৎসা বিষয়ে মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দেবে। এরই মধ্যে মেডিকেল বোর্ডের কয়েকজন সদস্য উনাকে পরীক্ষা করেছেন। চিকিৎসা শুরু হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ আপনারা দোয়া করবেন। আপনাদের মাধ্যমে আমার দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। এত প্রতিকূলতার মধ্যে যেটুকু চিকিৎসা পাওয়া যায় তাতে যেন উনি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ। উনার বয়স ৭৭ এর বেশি। উনি আধুনিক চিকিৎসা পাওয়ার কথা বিদেশে। সে সুযোগ না দেওয়ায় উনি এখনো শারীরিকভাবে যতটুকু আছে এটা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের রহমত ও দেশবাসীর দোয়া। উনার সুচিকিৎসার ব্যাপারে চিকিৎসকরা আশাবাদী। আমরা আশাবাদী।

‘আমরা বিশ্বাস করি উনার চিকিৎসার জন্য যে সুযোগ আছে, সেগুলো সরকার ও যারা দায়িত্বে আছেন দেবেন। তারা যদি বাইরে যেতে না দেন, তাহলে তো কিছু করার নেই। উনি তো একজন বন্দি মানুষ। উনি বাসা থেকে হাসপাতালে আসতে পারেন। আর কোথাও যেতে পারেন না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উনার সুচিকিৎসার দিতে হবে। ম্যাডাম চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসকদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে উনার চিকিৎসা চলছে।’

আপনারা কি আবারও বেগম জিয়ার চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছেন— সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে ডা. জাহিদ বলেন, ‘এ আহ্বান তো নতুন কিছু নয়। এ আহ্বান অনেকবার করা হয়েছে। পরিবার ও চিকিৎসকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।’

বেগম জিয়াকে কতদিন হাসপাতালে থাকা লাগতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আগেই বলা যাচ্ছে না। উনার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মেডিকেল বোর্ড যে সিদ্ধান্ত দিবে। যে কয়দিন লাগবে সে কদিন উনাকে থাকতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার দেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের প্রতি আস্থা আছে, তাই তিনি এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তিনি আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।