১০ বছর পর জাতীয় পার্টির (জাপা) ইফতারে বিএনপি অংশ নিয়েছে। রোববার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে রাজনৈতিক, কূটনীতিক ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সম্মানেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের ইফতারের আয়োজন করে।
অন্যান্য বছরের তুলনায় আওয়ামী লীগ নেতাদের উপস্থিত ছিল কম। ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী এবং আবদুস সালাম। অন্য দলের আমন্ত্রিতরা এলেও জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ আসেননি জি এম কাদেরের ইফতারে। তাঁর অনুসারীদের আমন্ত্রণ করা হয়নি।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দ্বৈরথ চললেও এক টেবিলে ইফতার করেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। ছিলেন যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টার, ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার ড. বিনয় জর্জসহ বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জীবদ্দশায় তাঁর আমন্ত্রণে সবশেষ ২০১৩ সালে জাপার ইফতারে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। পরের বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বিএনপি বর্জন করলেও রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাপার একাংশ অংশ নেয়। ওই বছর থেকে আর দলটির ইফতারে যোগ দেননি বিএনপি নেতারা। এরশাদের মৃত্যুর পর ২০২০ এবং ২০২১ সালে করোনার কারণে ইফতার পার্টি হয়নি। গত বছরের আমন্ত্রণ পেয়েও আসেননি বিএনপি নেতারা। যদিও আমন্ত্রণ পেয়েও আসেননি দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ সোমবার রাজনীতিবিদদের সম্মানে বিএনপির ইফতার। এতে আমন্ত্রিত জি এম কাদেরসহ জাপার জ্যেষ্ঠ নেতারা। এতে অংশগ্রহণের বিষয়ে গতকাল নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি।
জাপা চেয়ারম্যান বলেছেন, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় বিএনপির ইফতারে তিনি যেতে পারছেন না। তবে জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ প্রতিনিধি দল যাবে।
১০ বছর পর বিএনপি নেতাদের আগমন প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক মতভিন্নতা থাকলেও ইফতারের অংশ নেওয়া উচিত। আমন্ত্রণ রক্ষা করায় বিএনপিকে ধন্যবাদ।
জাপার ইফতারে আসেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, গণফোরামের একাংশের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও মহাসচিব মোস্তফা মোহসীন মন্টু, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নেতাদের দল এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী ও সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মনজু, বিএনপির জোট ত্যাগ করা ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল হাসানাত আমিনী ও মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ ফয়জুল্লাহ। এ দলগুলোর কয়েকটিকে নিয়ে জাপার নেতৃত্বে জোট হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। বিএনপি ভোট বর্জন করলে এই জোট বিকল্প হবে।
ইফতারে অংশ নেন জাপার কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ. সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মাসরুর মওলাসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা। ছিলেন সাবেক উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, কানাডা, ইরান, আলজেরিয়ার, নেপালসহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনার।