আ.লীগের শান্তি সমাবেশ থেকে নির্বাচনি প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ কেন্দ্রীয় ও নগর নেতাদের

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ১১টি সংসদীয় আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উত্তর ও দক্ষিণ শাখা ‘শান্তি সমাবেশ’ করেছে। দলটির কেন্দ্রীয় ও নগর নেতারা এতে অংশ নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

আজ শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আওতাধীন সাতটি সংসদীয় আসন এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের চারটি সংসদীয় আসন এলাকায় মিছিল পূর্ব শান্তি সমাবেশ করা হয়।

সরকার পতন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে আজ ঢাকাসহ সব মহানগরের থানায় থানায় বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে।

আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ থেকে ‘বিএনপির সম্ভাব্য দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে সতর্ক থাকার’ নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সেই সঙ্গে নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন তারা।

সমাবেশে আগামী নির্বাচনকে বানচালে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে দাবি করে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, এই ষড়যন্ত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি। দলটি পদযাত্রার নামে অগ্নিসন্ত্রাসের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আওয়ামী লীগকে টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আনতে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে ঢাকা-১০ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মিছিল পূর্ব শান্তি সমাবেশ করা হয়। সেখানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন আটটি নির্বাচনী আসনে বিজয়ী হতে এখন থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।

তিনি বলেন, ‘নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আগামী আট মাস আপনারা পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো আচরণ করবেন। শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের খবর তাদের কাছে পৌঁছে দেবেন।’ ঐক্যবদ্ধভাবে দল করলে আগামী নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী চায় বলে জানান দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশে তিনি বলেন, ‘সরকারবিরোধীদের ক্ষমতা ভাগাভাগির স্বপ্ন পূরণ হবে না।’

ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে বিএনপিকে নির্বাচন আসার আহ্বান জানিয়ে মোহাম্মদপুরের শান্তি সমাবেশ থেকে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়া কোনও সরকার উৎখাত করা যাবে না। নির্বাচনই হলো ক্ষমতা বদলের একমাত্র পথ।’

কেন্দ্রীয় নেতারা দাবি করে বলেন, অনির্বাচিত সরকার আনার মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্রকে বিএনপি নস্যাৎ করতে চায়। দেশের গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে যেকোনও চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত বলে জানান তারা।

মিরপুর-১-এর গোলচত্বরে আয়োজিত শান্তি সমাবেশ থেকে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘দেশের মানুষ নির্বাচনে বিশ্বাস করে, মানুষ ভোট দিতে চায়, তারা আগামী নির্বাচনে ভোট দেবে। যদি আগামী নির্বাচনে কেউ কোনও প্রকার বানচালের চেষ্টা করে, তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা তাদের প্রতিহত করে গণতন্ত্রকে রক্ষা করবো।’

বিএনপির পদযাত্রা থেকে হাজারীবাগের বেড়িবাঁধ, কামরাঙ্গীরচর এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং নিউমার্কেট এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি এ দাবি করে বলেন, ‘বিএনপি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলে জনগণ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না, দাঁতভাঙা জবাব দেবে।’

তাপস বলেন, ‘আমরা চাইলে ঢাকা মহানগরের কোনও এলাকায় আপনাদের (বিএনপি) নামার সুযোগ ছিল না। তারপরও গণতন্ত্ররে স্বার্থে, সংবিধানের স্বার্থে আমরা কোনও বাধা দেবো না।’

Scroll to Top