বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এটা প্রমাণিত হয়েছে উপ-নির্বাচনগুলোতে। আজ প্রমাণ হয়েছে, আওয়ামী লীগ এক হিরো আলমের কাছেও কতটা অসহায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধেও আওয়ামী লীগকে জিততে হয় ৬/৭শ ভোটে।
বিএনপি মহাসচিব শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ প্রমাণিত হয়েছে, আবদুস সাত্তারকে, যিনি বিএনপি ত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, জয়ী করতে বিরোধী প্রার্থীকে গুম করতে হয়। এসময় তিনি নেতাকর্মীদের কাছে প্রশ্ন রাখেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে? সুষ্ঠু হবে? আপনারা ভোট দিতে পারবেন? নেতাকর্মীরা ‘না’ ‘না’ বলে জবাব দেন।
বাজারের অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাজারের অবস্থা আপনারা জানেন। এক লাফে গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ২৬৬ টাকা বেড়েছে। আজ মা-বোনেরা এখানে আছেন। তারা জানেন, কী কষ্ট করে তাদের সংসার চালাতে হয়।
ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মসূচি সফল করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন আজ গ্রামের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে, ইউনিয়নের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা-জেলার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য, এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানোর জন্য আমরা এগিয়ে চলি। এগিয়ে চলা হবে আমাদের বিজয়।
আইএমএফের ঋণের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই সরকার আমাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিয়েছে। তারা আজ ঋণ গ্রহণ করছে। আপত্তি নাই। উন্নয়নের জন্য অবশ্যই ঋণ নিতে হবে, ঋণ নিতে হয়। কিন্তু সেই ঋণের টাকা নিয়ে যদি পাচার করে কানাডার বেগমপাড়াতে গিয়ে বাড়ি তৈরি করেন, ঋণ এনে ফ্ল্যাট কেনেন, মালয়েশিয়াতে সেকেন্ড হোম তৈরি করেন তাহলে সেই ঋণের টাকা বাংলাদেশের মানুষ পরিশোধ করবে কেনো? ঋণের টাকা আনবেন আর আমাদের জনগণের পকেট কেটে টাকা নিয়ে যাবে। মানুষের এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এখন মানুষ সরকারের পতন দেখতে চায়, পরিবর্তন দেখতে চায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা দেখছি, তারা মেগা প্রজেক্ট আবার শুরু করেছে। পাতাল রেলের প্রজেক্ট করেছে, সেই প্রজেক্টে ৫২ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। আর সাধারণ মানুষকে গরিব-দুস্থ ভাতা দিতো সেই ভাতার টাকা তারা লুট করতে শুরু করেছে এবং সেই ভাতার টাকাও বন্ধ করে দিচ্ছে।
সরকার আজ সাধারণ মানুষের দিকে তাকায় না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীনরা তিলে তিলে বড় হচ্ছে, ফুলে ফেঁপে উঠছে। পাকিস্তান আমলে এই আওয়ামী লীগ স্লোগান দিতো ‘২২ পরিবারকে দূর করতে হবে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে’। আজ সেই আওয়ামী লীগ কয়েক হাজার পরিবার তৈরি করেছে, যে পরিবার বাংলাদেশের সব সম্পদ লুণ্ঠন করে নিয়ে যাচ্ছে। আজ এ দেশ লুটেরাদের বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। এই লুটেরাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, ফজুলল হক মিলন, আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুজ্জামান রিপন, কামরুজ্জামান রতন, মীর সরাফত আলী সপু, শিরিন সুলতানা, বেনজীর আহম্মেদ টিটু, সাইফুল আলম নিরব, নারায়ণগঞ্জের সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।