বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা ও তাদের যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী গণতন্ত্র মঞ্চ ঘোষিত ১৪ দফা দাবি সমন্বয় করে শিগগিরই যৌথ দফা ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব জানান।
যুগপৎ আন্দোলনে ১০ দফা দাবি প্রস্তাব করেছে বিএনপি। রাষ্ট্র মেরামতের দাবি জানিয়ে ঘোষণা করেছে ২৭ দফা। যুগপৎ আন্দোলনে দলটির সঙ্গী গণতন্ত্র মঞ্চ প্রস্তাব করেছে ১৪ দফা।
জোটসঙ্গী হওয়ায় দুই পক্ষের সমন্বিত ন্যূনতম দফা প্রস্তাবের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। শিগগিরই ন্যূনতম দাবি নিয়ে একটা যৌথ ঘোষণা দেওয়া হবে।’
চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকার এবং তাদের এজেন্টরা শুরু হওয়া সরকারবিরোধী আন্দোলন দমন, নস্যাৎ করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করবে। আমরা এ নিয়ে বেশি মাথা ঘামাচ্ছি না। আমাদের মাথা ঘামানোর বিষয় একটাই, জনগণকে আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ করে, আরও সম্পৃক্ত করে এই ভয়াবহ দানবকে সারানো।’
গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার পতনের লক্ষ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ, বিএনপি ও অন্য দলগুলোকে নিয়ে ঘোষিত আমাদের কর্মসূচি পর্যালোচনা করেছি। এ ছাড়া আগামী দিনের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছি।’
যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের সঙ্গে দ্রুত বৈঠক হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। সেটি সফল করতে এবং আগামী দিনের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আন্দোলনে সবাই শরিক হোন। সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রকে মুক্তি করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আরও বৃহত্তর ঐক্য সৃষ্টি করে আমরা যেন সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি সেই ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি।’
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা যুগপৎ আন্দোলনের চারটি কর্মসূচি পালন করেছি। কর্মসূচি আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ধীরে ধীরে এই কর্মসূচির বিজয়ের কাছে যেতে চাই। কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, এ ব্যাপারে আমরা নীতিগত এবং কৌশলগত বিষয়ে আলোচনা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ঐক্যকে আরও দৃঢ় করা। এই ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরাবার জন্য বিভ্রান্ত সৃষ্টি করার জন্য শত্রুপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সজাগ থাকা এবং ঢাকা মহানগরে কীভাবে তৎপরতা বাড়ানো যায়, এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ঢাকা মহানগরে বিএনপি যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আমরা এটাকে সমর্থন জানিয়েছি। এটার মধ্য দিয়ে আমরা সে পর্যায়ে যাওয়ার চেষ্টা করব, যাতে একটি অভ্যুত্থানের দিকে নিয়ে যেতে পারি। ৪ ফেব্রুয়ারি কর্মসূচির পরে পরবর্তী ধাপে কী কর্মসূচি দিতে পারি, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দলটির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বরকত উল্লা বুলু ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জোটটির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম।