চলমান আন্দোলনে রক্ত দিয়ে হলেও জয়ী হব: মির্জা ফখরুল

চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রক্ত দিয়ে হলেও জয়ী হওয়ার জোরালো প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি আজ শনিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত বাগেরহাটের নুরে আলম তানু, ঢাকার মকবুল হোসেন এবং পঞ্চগড়ের আব্দুর রশিদ আরেফীনের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন। তার পক্ষে আর্থিক সহযোগিতার চেক নিহতদের পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘রক্ত দিয়ে হলেও একটি সুন্দর আবাসভূমি গড়তে পারি, সেই লক্ষ্যে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা যে যুদ্ধে নেমেছি, সেই যুদ্ধে আমরা জয়ী হবই হব।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকে একটা দুঃসময় উপস্থিত হয়েছে। বর্বর দানবীয় একটা শক্তি আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, তছনছ করে দিচ্ছে। দেশনেত্রীকে বছরের পর বছর বন্দি করে রেখেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ছয় শ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে, আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী এখন জেলে আছে। এখনো আমাদের শীর্ষনেতাদের অনেকে জেলে আছেন। ছাত্রনেতারা আছে, যুবনেতারা আছে, স্বেচ্ছাসেবক নেতারা আছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি কারো মুখে এতটুকু ক্লান্তি দেখিনি, হতাশা দেখিনি। সবাই উজ্জীবিত। যত নির্যাতন, অত্যাচার, নিপীড়ন আসুক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এই ভয়াবহ দানবকে পরাজিত করব। আমরা সত্যিকার অর্থে এখানে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব।’

নিহত নেতাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যারা প্রাণ দিয়েছেন তারা একটা আদর্শের জন্যে, একটা লক্ষ্যের জন্যে প্রাণ দিয়েছেন। সেই আদর্শ সেই লক্ষ্য হচ্ছে তার নিজের দেশকে মুক্ত করবার জন্য, এখানে সব মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য, বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করবার জন্য।’

তিনি বলেন, ‘এবার ২২ আগস্ট থেকে আমরা ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করি তখন আমাদের প্রায় ১৫ জন ভাই শহীদ হয়েছেন। এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী একনায়কতান্ত্রিক স্বৈরাচারী অনির্বাচিত সরকারের পুলিশের গুলিতে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে। তারা চলে গেছেন শহীদ হয়েছেন কিন্তু বীরের মতো।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা কেউ পেছনে পালাতে গিয়ে নিহত হননি, তারা সম্মুখযুদ্ধে সামনে দাঁড়িয়ে বুকে পেতে দিয়েছেন। আমি তাদের দেশপ্রেমের জন্য যে আত্মোৎসর্গ, সেই আত্মোৎসর্গ এদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের পরিচালায় আরও বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি প্রমুখ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান প্রমুখ।