রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী থাকলেও নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়ার। শুধু তাই নয়, ভোট এত কম পেয়েছেন যে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। একই সঙ্গে মেয়র পদে লড়াই করা ৯ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আরও ছয়জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।
গতকাল মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রাতে ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে মোট ভোট পড়েছে দুই লাখ ৮০ হাজার ৯৭২।
এতে জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান জামান পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৮৯২ ভোট। আরেকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফুর রহমান পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮৮৩ ভোট। এই তিনজন তাদের জামানত ফেরত পাবেন।
অন্যদিকে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া ২২ হাজার ৩০৬ ভোট পেয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ ভোট। নির্বাচনে তিনি ২২ হাজার ৪৭৮ ভোট পেলে জামানত ফেরত পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতেন। তবে নিয়ম অনুযায়ী আরও ১৭২ ভোট পেলে নৌকার প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হতো না। শুধু ডালিয়া নয়, একই সঙ্গে জামানত হারিয়েছেন আরও পাঁচ মেয়রপ্রার্থী।
স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচনি বিধিমালা ২০১০ এর ৪৪ নম্বর ধারায় বলা আছে, ‘কোনো প্রার্থী নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ (আট ভাগের এক ভাগ ভোটের কম) অপেক্ষা কম ভোট পেলে তার জামানতের টাকা সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে।’
এই নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী মেয়র নির্বাচনের ক্ষেত্রে, প্রতিটি মনোনয়নপত্রের সঙ্গে অনধিক ৫ লাখ ভোটার সম্বলিত নির্বাচনী এলাকার জন্য ২০ হাজার টাকা, ৫ লাখ ১ থেকে ১০ লাখ ভোটার সম্বলিত নির্বাচনী এলাকার জন্য ৩০ হাজার টাকা, ১০ লাখ ১ হইতে ২০ লাখ ভোটার সম্বলিত নির্বাচনী এলাকার জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং ২০ লাখ এক ও তদূর্ধ্ব ভোটার সম্বলিত নির্বাচনী এলাকার জন্য ১ লাখ টাকা জমাদানের প্রমাণস্বরূপ ট্রেজারি চালান বা পে-অর্ডার বা কোনো তফসিলি ব্যাংকের রসিদ জমা দিতে হবে।
এই বিধান অনুসারে ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৭০ ভোটারের রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ২০ হাজার টাকা জামানত দিতে হয়েছে।
রংপুরের এই নির্বাচন নিয়ে দিনভর তেমন কোনো অভিযোগ ছিল না। শুরুতে জাপার প্রার্থী ভোটগ্রহণ ইভিএমের ধীরগতি ও নিজে ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনার কথা বলেন। তবে এর চেয়ে বড় কোনো অভিযোগ সেই অর্থে পাওয়া যায়নি। অবশ্য কাউন্সিলর প্রার্থীর লোকজনের মধ্যে কিছু জায়গায় সমস্যা হয়েছে। সংঘর্ষে বিজিবির গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।