কুমিল্লা গণসমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করতে চায় বিএনপি

যে কোনো প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে মহানগর, কুমিল্লা দক্ষিণ এবং উত্তর জেলা বিএনপি কুমিল্লায় আসন্ন বিভাগীয় গণসমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করতে চায়। বিএনপি নেতাকর্মীরা আগামী ২৬ নভেম্বর নগরীর টাউন হল মাঠে আয়োজিত সমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করতে চান। ইতিমধ্যে মহানগর, কুমিল্লা দক্ষিণ এবং উত্তর জেলা বিএনপির নেতারা উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন। দফায়-দফায় করছেন প্রস্তুতি সভা। এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলে ফেরার মিশনে মাঠে কাজ করছে সিটি নির্বাচনে বহিষ্কৃত সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু এবং জনতার মেয়র খ্যাত নিজাম উদ্দিন কায়সার। বহিষ্কৃত এ দুই নেতাই বিএনপির সমাবেশ সফল করতে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মাঠে কাজ করছে। অপরদিকে সব বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশ সফল করার মিশনে মাঠে কাজ করছে মহানগর-দক্ষিণ এবং উত্তর জেলা বিএনপি।

বিএনপি আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির উদ্যোগে গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। সরকার পতনের আন্দোলন তরান্বিত করতে এবং বৃহৎ আন্দোলনে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতেই এ সমাবেশের আয়োজন বলে বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান।

ইতিমধ্যে টাউনহলের সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন বিএনপির নেতারা। কুমিল্লার বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকশ’ নেতাকর্মী স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করছে। অতিথি নেতাকর্মীদের জন্য মহানগরের কয়েক শ’ ফ্ল্যাট এবং বাড়ি খালি করা হয়েছে। মহানগর এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতাদের উদ্যোগে অতিথি নেতাকর্মীদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, সব বাধা উপেক্ষা করে কুমিল্লায় একটি সফল সমাবেশ করা হবে।

এদিকে বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অনেকটাই চাঙ্গা। কুমিল্লায় নিজেদের ঊর্বর ভূমিতে সংগঠনকে আবারও শক্তিশালী করতে চায় বিএনপি। সেই লক্ষ্যে সমাবেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক জনসমাগম করার টার্গেট নিয়েছেন তারা। দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য আমিনুর রশীদ ইয়াছিন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপুসহ শীর্ষ নেতারা সমাবেশ সফল করতে দিনরাত গণসংযোগসহ প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। অপরদিকে দলে ফেরার মিশন নিয়ে মাঠে কাজ করছে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্না সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। তাছাড়া জনতার মেয়র খ্যাত নিজাম উদ্দিন কায়সারও কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মাঠে নেমেছে। বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে মাঠে নিজের অবস্থান জানান দিতে প্রতিদিনই কর্মী সমর্থক নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।

এ বিষয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য আমিনুর রশীদ ইয়াছিন বলেন, সব বাধা উপেক্ষা করে আমরা কুমিল্লায় গণসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে কাজ করছি, এরই মধ্যে আমরা প্রশাসনের পক্ষ হতে লিখিতভাবে মাঠের অনুমোদন পেয়েছি। এটা জনসভা হবে না এইটা জনসমুদ্রে রূপান্তর হবে। মহানগরের কোনো বাড়িতে পুরুষলোক থাকবে না, সবাই সমাবেশে আসবে। মানুষ এই সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, কুমিল্লা বিএনপির ঊর্বর ভূমি, আমরা নিজেদের ঐতিহ্য ফেরাতে কাজ করছি, তারেক রহমানের নির্দেশে দলকে সুসংগঠিত করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি করা হবে। সমাবেশ সফল করার ক্ষেত্রে কেউ অন্তরায় হলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।

যে কোনো মূল্যে আমরা আমাদের সমাবেশ সফল করব। দূরদূরান্ত থেকে আমাদের এখানে যারা আসবে তাদের জন্য আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো, খাওয়া সব ধরনের ব্যবস্থা করছি। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু বলেন, আমরা সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুটি সম্পন্ন করেছি। মানুষের কাছ থেকে আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এই পর্যন্ত যতগুলো বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে তারমধ্যে কুমিল্লার এই সমাবেশে রেকর্ডসংখ্যক লোক সমাগম হবে।