গতকাল রোববার রাত ৮টা ৫ মিনিটে হোটেল সোনারগাঁওয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের বৈঠক শরু হয় । চলে ৫৫ মিনিট। বৈঠকের ঠিক ৫ মিনিট আগে হোটেলে প্রবেশ করেন খালেদা জিয়া।
বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
বৈঠকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যা, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারের অব্যাহত দমন নিপীড়ন এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনে দেশবাসীর প্রত্যাশার বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেগম জিয়াকে একান্তে নিলেন। সাত মিনিট হলো একান্ত আলাপচারিতা। এবার কথা বললেন সুষমা, প্রথমেই জানতে চাইলেন তাঁর (বেগম জিয়ার) ছেলে কেমন আছে, জিজ্ঞেস করলেন, ‘ছেলেকে নিয়ে আপনি কি ভাবছেন।’ হঠাৎ এই প্রশ্নে একটু বিব্রত বেগম জিয়া। বললেন, ‘ও সুস্থ হোক তারপর দেখা যাবে।’ এরপর বেগম জিয়ার লন্ডন সফর নিয়ে আরও দুটি প্রশ্ন করলেন সুষমা। বুঝিয়ে দিলেন হাড়ির সব খবর জানেন তিনি। লন্ডনে দুটি বৈঠক নিয়ে বেগম জিয়াকে করা প্রশ্নের উত্তরে বেগম জিয়া শুধু ম্লান হেসেছেন। তারপর দুই হাত ধরে করমর্দনে বেগম জিয়াকে বিদায় জানালেন সুষমা।
বৈঠক শেষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যা, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারের অব্যাহত দমন নিপীড়ন এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনে দেশবাসীর প্রত্যাশার বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন তার সরকার বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। ভারত যেহেতু বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী এবং বৃহত্তর গণতান্ত্রিক দেশ সেহেতু বাংলাদেশে নির্বাচনের বিষয়ে ভারতের মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে। এছাড়াও মিয়ানমার সরকার কর্তৃক নির্যাতিত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে ভারতের পক্ষ থেকে চাপ প্রয়োগের অনুরোধ জানিয়েছে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল জানান যে, সুষমা স্বরাজ বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়াই একমাত্র সমাধান। মিয়ানমারকে অবশ্যই নিজ নাগরিকদের ফেরত নিতে হবে। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানও হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, ২৩ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি