লজ্জা থাকলে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে বিএনপি নেতারা যেতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
গতকাল মঙ্গলবার (১৭ মে) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪২তম ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে ব্যক্তি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনই ছিল না, ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্রের অগ্নিবীণা ও উন্নয়ন-প্রগতির প্রত্যাবর্তন। গত ৪১ বছরের পথচলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বদলে গেছে।
‘আর গত ১৩ বছরে প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। এ অভূতপূর্ব উন্নতি সহ্য হচ্ছে না বিধায় আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, গর্তের ভেতর থেকে বিএনপি-জায়ামাত উঁকি দিচ্ছে এবং বিশৃঙ্খলার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বলতে চাই- আমরা এখনো মাঠে নামিনি, প্রয়োজনে নামবো। যদি কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের প্রতিহত করবো।
তিনি আরও বলেন, সব প্রতিকূলতার মধ্যেও স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ের দেশে, খাদ্যে ঘাটতি থেকে উদ্বৃত্তের দেশে উন্নীত করে চিরদিন দেশের মানুষের পাশে থাকা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
‘কিন্তু বিএনপি-জামায়াত, তাদের দোসর আর কিছু বুদ্ধিজীবীর এই উন্নয়ন-অগ্রগতি ভালো লাগে না। এ কারণেই সমগ্র পৃথিবী যখন প্রশংসা করে, তখনও তারা প্রশংসা করতে পারে না। বরং তাদের কথায় মনে হয় দেশ ১০ হাত দেবে গেছে, যা বাস্তবের বিপরীত।’
বেগম জিয়া, মির্জা ফখরুল সাহেবদের আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতু করতে পারবে না এমন মন্তব্য এখনও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়ায় উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, এখন পদ্মা সেতু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন, আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।
‘ফখরুল সাহেবরা পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যাবেন নাকি নিচ দিয়ে আওয়ামী লীগের নৌকায় করে যাবেন, সেটি ভাবছি। তাদের যদি লজ্জা থাকে, জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে তারা যেতে পারেন। আমরা চাই আপনারা পদ্মা সেতু ব্যবহার করেন।’
১৯৮১ সালের ১৭ মের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে তার হার না মানা দেশপ্রেম ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে জিয়াউর রহমান সেদিন তাকে দেশে ফিরতে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। সেদিনের মুষলধারে বৃষ্টি যেনো ছিল শেখ হাসিনাকে পেয়ে প্রকৃতির আনন্দ অশ্রু আর মেঘগর্জন ছিল বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের প্রতি তীব্র ধিক্কার। শেখ হাসিনাকে বরণ করে প্রকৃতি যেনো জানান দিয়েছিল- ষড়যন্ত্রকারী ও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের দিন শেষ।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ বিশেষ সভায় ওবায়দুল কাদের সূচনা বক্তব্য ও আওয়ামী লীগসহ জাতীয় নেতা ও দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা বক্তব্য দেন।