তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ মন্তব্য করেছেন, বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিধায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ভয় পায়। তিনি বলেন, ‘আসলে যে সমস্ত দল জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তারাই ভোট বর্জন করে। আর জননির্ভর কোনো দলের পক্ষে ভোট বর্জন করা হচ্ছে আত্মহননের মাধ্যম।’
আজ বুধবার সকালে ঢাকা অফিসার্স ক্লাবে ‘বিজনেস বাংলাদেশ’ এর পঞ্চম বর্ষে পদার্পণ ও ইংরেজি দৈনিক ‘ডেইলি বাংলাদেশ আপডেট’ এর আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন নয়, ক্ষমতায় যাওয়ার চোরাগলি খোঁজে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য ‘ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি হলে সরকার পালানোর পথ খুঁজে পাবে না’ এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ভোটের পরিবেশ বলতে তারা কী বোঝায় সেটিই বিএনপির কাছে আমার প্রশ্ন। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন যেভাবে ভোট করতেন-‘দশটা হোন্ডা, বিশটা গুন্ডা, ভোট ঠাণ্ডা’, এটাই কি মির্জা ফখরুল সাহেবের কাছে ভোটের পরিবেশ! অথবা বিএনপি জয়লাভ করবে সেই নিশ্চয়তা আগে থেকেই বিধান করতে হবে, সেটিই তার কাছে ভোটের পরিবেশ।’
বাংলাদেশে ভোটের অবাধ সুষ্ঠু পরিবেশ আছে বলেই দেশে সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে এবং হয়েছে বিধায় অনেক জায়গায় বিএনপি জয়লাভ করেছে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবের বক্তব্য নতুন কিছু নয়। আসলে তারা চায় এমন একটি ব্যবস্থা বাংলাদেশে হোক, যেটির মাধ্যমে নিশ্চিত করা যাবে যে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে। সেটি তো জনগণ করতে পারবে না। এখানে জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত, আগামীতেও জনগণ ভোট দিলে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনা করবে। এর বাইরে আওয়ামী লীগের কাছে কোনো পথ নাই। কিন্তু মির্জা ফখরুল সাহেবরা অনেক চোরাগলির পথ খোঁজেন, এটিই হচ্ছে দুর্ভাগ্য।’
বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া বিএনপি’র দাবির প্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, এটিই আমি প্রত্যাশা করি, প্রার্থনা করি। এর আগেও বাংলাদেশের চিকিৎসাতেই বেগম খালেদা জিয়া ভালো হয়ে ঘরে ফিরে গিয়েছিলেন। এখনো বেগম খালেদা জিয়া একটু অসুস্থ হওয়ার প্রেক্ষিতে তারা যে ধুয়া তুলছেন সেটিও নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশের চিকিৎসাব্যবস্থা ও চিকিৎসকদের প্রতি তাদের এতো অবজ্ঞা কেন সেটিই আমার প্রশ্ন।’
এর আগে অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্য মন্ত্রী সংবাদপত্রগুলোর প্রচার সংখ্যা বিষয়ে বলেন, ‘চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদপ্তরে পত্রিকার সার্কুলেশন দেওয়া আছে, সেটি বাস্তবসম্মত নয়। আমরা আপাতত খুব সহসা ঠিক সার্কুলেশনের ভিত্তিতে ক্রম ঠিক করে দেবো। সংবাদপত্রগুলোর মালিক, সম্পাদক, সাংবাদিক অনেকেই বিশেষ করে জাতীয় প্রেসক্লাব, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ অনেকেই এই শৃঙ্খলা আনার জন্য আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন এজন্য সবাইকে ধন্যবাদ।’
অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম খান এমপি, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, অতিরিক্ত সচিব ও অফিসার্স ক্লাব, ঢাকা’র সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন, ঢাকা রেঞ্চ পুলিশের ডিআইজি হাবিবুর রহমান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, দৈনিক সময়ের আলো নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।
বিকেলে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক সচিবালয়ে সাক্ষাৎ করতে এলে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী তাকে স্বাগত জানান।