বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ‘সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের’ অভিযোগ এনেছেন সংগঠনটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন ও যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটিকেও তিনি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন। রাশেদ খাঁন নূরের এই আচরণকে ‘চরম অসাংগঠনিক কার্যকলাপ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি নুরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
গতকাল শনিবার নুর রাশেদ ও সোহরাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নিজেকে ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক দাবি করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। ফেসবুকে প্রকাশ করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২ জুলাই বাংলাদেশ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের এক যৌথ সভায় কমিটি বিলুপ্তি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। একইসঙ্গে ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কমিটি গঠন করতে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁনও পরে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, \”যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে নুরুল হক নুরের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করার এখতিয়ার নেই। ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক পদবি ব্যবহার করায় নুরের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এই মর্মে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।\”
এতে আরও বলা হয়, ২ জুলাইয়ের সেই যৌথ সভায় রাশেদসহ কেন্দ্রীয় কমিটির অনেকে উপস্থিত ছিলেন না। বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে জানাতে চাই, এমন যৌথ আলোচনা সভায় যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, মশিউর রহমান, মো. সোহরাব হোসেন, মাহফুজুর রহমান খান, তারিকুল ইসলাম এবং সদস্য আরিফুল ইসলামসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন না। এমতাবস্থায় কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুপস্থিতিতে খোদ কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করার এখতিয়ার কারও নেই।
সরকারি চাকরির কোটা সংরক্ষণের বিরোধিতায় গড়ে ওঠা সংগঠনটি সংগঠনের দুই নেতার মুখোমুখি ঘোষণায় অনেকটাই ভাঙনের কবলে পড়েছে । ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন ও যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সোহরাব হোসেন কীভাবে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন, জানতে চাইলে নুর জানান, ফেসবুক মেসেঞ্জারে একটি চ্যাট গ্রুপে তাদের কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা, বিশেষ করে আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন ও যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সোহরাব হোসেন কিছু স্পর্শকাতর কথা বলেছেন। সেখানে দলে ভাঙন সৃষ্টি ও পারস্পারিক দ্বন্দ্ব তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল। সেগুলো আবার সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তারা বিষয়টি তদন্ত করেছেন। পরে নির্বাচন কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ বিষয়ে রাশেদ বলেন, ‘এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ। আমরা মনে করছি, এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আর চ্যাটিংয়ের জন্য কমিটি বিলুপ্ত করা সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। আমরা আমাদের সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে যাব।’ এ সময় নুরের কথায় বিভ্রান্ত না হতে অনুরোধ করেন তিনি।