তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ মন্তব্য করে বলেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রচণ্ড মিথ্যাচার করেন। সেটার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে স্বাধীনতার ৫০তম বর্ষপূর্তিতে হেফাজতের ব্যানারে বিএনপি-জামায়াতের সহযোগিতায় ও অংশগ্রহণে যে তাণ্ডব হয়েছে সেটিকে অস্বীকার করা এবং অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর অপচেষ্টা চালানো।
মিথ্যা বলতে বলতে কখন আবার হয়তো বলে বসবেন খালেদা জিয়ার করোনা হওয়ার জন্যও আওয়ামী লীগ দায়ী।
আজ রোববার (১৩ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন। এ ধরনের মিথ্যাচার একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদের কাছ থেকে কখনও কাম্য নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, জনগণের উত্তাল আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ভেসে যাবে- একথা আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার ছয় মাস পর থেকে শুনে আসছি। গত ১২ বছর ধরে শুনে আসছি। বাস্তবতা হচ্ছে জনগণের রায় নিয়ে পরপর তিনবার শেখ হাসিনা সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করছেন।
‘জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধে কী করেছেন সেগুলো ধীরে ধীরে বের হয়ে আসছে। যুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তানিদের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি করেছেন। এগুলো বেরিয়ে আসছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় কোনো মুক্তিযোদ্ধা কারো বাড়িতে পানি খেয়েছেন সেই অপরাধে সেই বাড়ির ওপর নির্যাতন হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় কোনো মুক্তিযোদ্ধা কারো বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন সেটি জানার পর রাজাকার, আলবদর ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সে বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধারা কারো বাড়ি একবেলা ভাত খেয়েছে, সে অপরাধে সে বাড়ির বয়স্ক পুরুষদের ধরে নিয়ে গেছে, নির্যাতন করেছে, এমনকী মেরেও ফেলেছে। ’
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেন আর তা স্ত্রী-পুত্ররা পাকিস্তানিদের ক্যান্টনমেন্টে একেবারে নতুন বউয়ের আদরে থাকে, এটি কি কখনও সম্ভব? এটি কখনও সম্ভব নয়। এখানেই প্রমাণিত হয়। এরপরে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন করা শুরু করার পর মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ভূমিকা কী ছিল সেটি প্রমাণিত হয়। শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। তিনি জাতিসংঘে গিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে ওকালতি করেছিলেন। জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে আসলে পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করেছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের প্রতিষ্ঠিত বিষয় নিয়ে মিথ্যাচার করলে আইন অনুযায়ী বিচার করা যায়। কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ববস্থা নেওয়া হচ্ছে না- এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যে কোনো নাগরিক সংক্ষুব্ধ হয়ে এর বিরুদ্ধে আদালতে ব্যবস্থা নিতে পারেন।
গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য মন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইন চূড়ান্ত করে আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং নেওয়া হচ্ছে। আইন মন্ত্রণালয় ভেটিং করে দিলে সেটি মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। এই আইন পাস হলে সাংবাদিকদের আর শ্রমিক হিসেবে অভিহিত করা হবে না। সম্প্রচারের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের আইনি সুরক্ষা হবে। দেশে ৩৪টি টেলিভিশন চ্যানেল ও ২২টি রেডিও রয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকদের সুরক্ষা হবে। এই আইন হলে যে কোনো সময় ছাঁটাই করা, কথায় কথায় বিদায় করে দেওয়া- এগুলো অনেকটা বন্ধ হয়ে যাবে, সবাইকে আইনি সুরক্ষা দেওয়া যাবে।