বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণে আসন্ন ঈদে তাকে হাসপাতালেই থাকতে হচ্ছে। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানান, চিকিৎসা চলছে মেডিক্যাল বোর্ডের নির্দেশনামতো। অবস্থার দ্রুত উন্নতি না ঘটলে আরও বেশ কিছু দিন তাকে থাকতে হবে হাসপাতালেই।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর একজন চিকিৎসক জানান, \”খালেদা জিয়ার শারীরিক উন্নতি হচ্ছে এটি সত্য, তেমনি এটিও সত্য- তিনি এখনো ক্রিটিক্যাল অবস্থায় আছেন। তাকে এখনো পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। কোভিডপরবর্তী সমস্যাগুলো কখন কী হয় তা বলা মুশকিল।\” তাই তাদের পরামর্শ- বেগম খালেদা জিয়াকে আরও বেশ কিছু দিন সিসিইউতে থাকতে হবে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, \”বিএনপি চেয়ারপারসন এখনো সুস্থ নন। তার চিকিৎসা চলছে।\”
উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। ২৭ এপ্রিল তিনি ভর্তি হন এভারকেয়ার হাসপাতালে। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় ৩ মে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। ২০১৮ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হলে খালেদা জিয়া কারাগারে যান। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাও সাজা হয় খালেদা জিয়ার। গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিতের আগ পর্যন্ত কারাগারেই কেটেছে খালেদা জিয়ার সব ঈদ।
ঢাকায় নিযুক্ত কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে চিঠি পাঠিয়েছেন। জানা গেছে তাদের কেউ কেউ উপহারও পাঠিয়েছেন। এ ছাড়া টেলিফোন করে বেশ কিছু দেশের রাষ্ট্রদূত ও মিশনপ্রধান খালেদা জিয়ার খোঁজ নিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে চিঠি ও ফুল পাঠান। গত ২২ এপ্রিল চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং ফুলের তোড়া পাঠিয়ে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করেন। তিনি খালেদা জিয়ার জন্য চীনের তৈরি হারবাল মেডিসিনও পাঠিয়েছেন। ৭ মে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী এবং ১৪ এপ্রিল পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে চিঠি দেন। এর পর গতকাল তিনি গিফট বক্সও পাঠান। ১৩ এপ্রিল এক চিঠিতে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করেন জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো।
বিএনপির ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, \”ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে বাংলাদেশস্থ কূটনীতিকদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েছে। কারণ তার জীবনের সঙ্গে বাংলাদেশের গণতন্ত্র তথা জনগণের অধিকার অনেক কিছু সম্পর্কিত।\” তিনি জানান খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো নিয়েও কূটনীতিকদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।