প্রণোদনা মালিকের তহবিল বাড়ানোর কাজে ব্যয় হয়: রাশেদ খান মেনন

ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন জানিয়েছেন যে, করোনাকালে সরকারের দেওয়া প্রণোদনার টাকা মালিকদের ব্যক্তিগত তহবিল এবং অর্থসম্পদ বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয়।

আজ শনিবার (০১ মে) বিশ্ব শ্রমিক দিবস উপলক্ষে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা উল্লেখ করেন।

করোনাকালে এবারের মে দিবসে শ্রমিকদের কোন বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিৎ জানতে চাইলে রাশেদ খান মেনন বলেন, যেহেতু সরকার উৎপাদন অব্যাহত রাখতে শিল্প-কলকারখানাগুলো চালু রেখেছে, তাই প্রথমত শ্রমিকের নিরাপদ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থাৎ স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন তারা কর্মক্ষেত্রে উৎপাদনে অংশগ্রহণ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয়ত বর্তমানে শ্রমিকদের মজুরি ষাট শতাংশে নেমে এসেছে। সেই মজুরিকে শতভাগে পূর্ণ করা। এছাড়াও কর্মহীন হয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। এই তিনটি বিষয়ের ওপরেই বর্তমানে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

মালিকদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম এই নেতা বলেন, সরকার মালিকদের প্রণোদনা দিচ্ছে, কিন্তু মালিকরা প্রণোদনার অর্থ তাদের নিজেদের তহবিল এবং অর্থ সম্পদ বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করছে। শ্রমিকদের বেতন বোনাস পরিশোধ, কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা এবং শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে যাওয়া আসার জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা, শ্রমিকদের মাস্ক ও স্যানিটাইজার দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে কিন্তু মালিকরা তার কিছুই করছে না। এগুলো খুবই খারাপ উদাহরণ।

সময়মত বেতন-বোনাস না দেওয়া হলে শ্রমিক অসন্তোষের সম্ভাবনা রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ এবং বিক্ষোভ হতেই পারে। কারণ একদিকে শিল্প-কলকারখানা খোলা রাখা হবে, অন্যদিকে তাদের প্রাপ্য মজুরি দেওয়া হবে না, এ দুটো বিষয় একসঙ্গে হতে পারে না। সুতরাং শ্রমিকরা যদি অসন্তুষ্ট হয়ে রাস্তায় নামেন এতে তাদের দোষারোপ করাও যাবে না বলে আমি মনে করি। শ্রমিকেরতো আর কোনো দোষ নেই। শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা তাকে দিতে হবে। শ্রমিকের পেটতো আর থেমে থাকেনা।

সরকারের করণীয় কি হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার প্রণোদনার টাকা দিয়ে বলেছে, শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য টাকা দেওয়া হল। কিন্তু সেই টাকা মালিকরা বেতন না দিয়ে, কোথায় ব্যবহার করছে, সেটা জবাবদিহিতার আওতায় আনা দরকার। শ্রমিক যেন তার বেতনের টাকা সময়মত পায় সরকারের পক্ষ থেকে সেটা গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা অনেক জরুরি।

Scroll to Top