হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাওলানা জোনায়েদ আল হাবীব ঘোষণা দিয়ে বলেছেন যে, করোনার দোহাই দিয়ে কওমি মাদ্রাসার কার্যক্রম বন্ধের পাঁয়তারা করা হলে কঠোর আন্দোলন করা হবে।
শুক্রবার (২ এপ্রিল) বাদ জুমা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে হেফাজতে ইসলাম আযোজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মাওলানা জোনায়েদ আল হাবীব বলেন, করোনার দোহাই দিয়ে মসজিদ বন্ধ করা যাবে না। করোনা আল্লাহ দিয়েছেন। করোনার হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে মসজিদে বসেই তার কাছেই মুক্তি চাইবো। সরকারের প্রজ্ঞাপনে কওমি মাদ্রাসা বন্ধের কোনো নির্দেশনা নেই। তবে এই করোনার দোহাই দিয়ে কওমি মাদ্রাসা বন্ধ ও ইসলামী সভা-সমাবেশ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে।
যদি এবার করোনার দোহাই দিয়ে মাদ্রাসা বন্ধ করা হয় তবে রাজপথে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তিনিবলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিটি গ্রামের বাড়ি-ঘরে মানুষ রাতে ঘুমাতে পারে না। পুলিশ বাহিনী প্রত্যেক রাতে গ্রামের বাড়িগুলোতে তল্লাশি চালায়। যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের স্বজনরাও রাতে বাড়িতে থাকতে পারে না। তাদের পরিবার আতঙ্কিত। আজ তাদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তিনি দাবি জানান, অবিলম্বে এমপি মুক্তাদির চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হোক।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আল্লামা মামুনুল হক বলেন, হেফাজত কারো তল্পিবাহক নয়। মনঃপুত না হলেই আজ বিএনপি কাল জামায়াত হয়ে যায় না হেফাজত। হেফাজত নিজস্ব শক্তির বলে আল্লাহর উপর ভরসা করে, হেফাজত একাই যথেষ্ট। যখনই দেশের বিরুদ্ধে, ঈমান-আকিদার বিরুদ্ধে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হবে তখনই হেফাজত কারো রক্তচক্ষু পরোনা না করে রাজপথে নেমে আসবে।
তিনি বলেন, তিনদিনের হেফাজতের আন্দোলনের ঘটনায় আজ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ পালন করছে। আমাদের তো তা করার কথা ছিল না। আজ বাংলাদেশ এমএমবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ব্যস্ত আছে। বিক্ষোভ কার্যক্রম করার কথা ছিল না। কওমি মাদ্রাসার বড় পরীক্ষা থাকার পারও আজ বিক্ষোভ করছি।
‘কারো চোখের গরম ও ভয় দেখিয়ে হেফাজতকে দমিয়ে রাখা যাবে না। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া মানে হেফাজত। বাংলাদেশ মানে হেফাজত। ২০টি মায়ের বুক খালি হলো। আইজিপি আপনাকে তো শোক প্রকাশ করতে দেখলাম না। তারা তো মানুষ না হেফাজত। ’
তিনি বলেন, তদন্ত করুন পুলিশ হেফাজতে থেকে থানার গারদে ঢুকে হেফাজতের কর্মীদের ওপর কারা হামলা করছে। যারা বিনা উসকানিতে তাওহিদী জনতার উপর হামলা করেছিল তাদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
অভিযানের নামে নাটক সাজানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছুরি কী কাজে ব্যবহার হয় জানেন না? এ নাটক পুরনো হয়েছে। কোরবানি ঈদে হয়তো সে ছুরিগুলো আর সেবা দেবে না আমরা তা আর রাখবো না।
হেফাজতের অর্থ সম্পাদক মাওলানা মনির হোসেন কাসেমী বলেন, ভালোয় ভালোয় ছাত্রলীগকে সামলান। ওরাই আপনার মসনদ নাড়িয়ে দেবে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা জসিম উদ্দিন বলেন, দেশটাকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। প্রতি বিন্দু রক্তের হিসাব নেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় নেতা আহমেদ আলী কাসেমী বলেন, কারা বায়তুল মোকাররমকে রক্তাক্ত করেছে জানতে চাই। এপর্যন্ত যারা মারা গেছে সবাই পুলিশের গুলিতে। নিহত পরিবারকে এক কোটি করে টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহতদের চিকিৎসা, বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে।
হেফাজতের অন্যতম নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফি বলেন, আমরা আইজিপিকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, পরিস্থিতি দেখবেন নাকি পরিস্থিতি তৈরি করবেন। আপনার উদ্দেশ্যপ্রবণ সদস্যদের থামান। কয়টা হেলমেট কেড়ে এনেছেন যে আমাদের ছুরি নিয়ে গেলেন।