আগামী ১০ মার্চ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ও ১৬ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় সমাবেশ করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। বিষয়টি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে অবহিত করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল।
গতকাল সোমবার (৮ মার্চ) দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক সাবেক এমপি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন- ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের গত নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আওয়াল ও দক্ষিণ সিটির প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
এ প্রসঙ্গে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, আমরা প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সমাবেশের কর্মসূচি করছি। সিটি করপোরেশন ও বিভিন্ন নির্বাচনে যে ভোট কারচুপি হচ্ছে, দিনের ভোট রাতে হচ্ছে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার উদ্দেশে এ সমাবেশ। সে অনুযায়ী ঢাকায় আমরা দু’টি জনসভা আহ্বান করেছি। একটি ঢাকা উত্তর ও আরেকটি দক্ষিণের আওতাধীন এলাকায় হবে। আমরা দলের পক্ষ থেকে কমিশনারকে অবহিত করেছি। আশাবাদী আগামী ১০ ও ১৬ মার্চ দু’টি জনসভা করতে সক্ষম হবো।
তিনি বলেন, ঢাকা উত্তরের তাবিথ আওয়াল ও দক্ষিণের ইশরাক হোসেন গত সিটি নির্বাচনে আমাদের দলের প্রার্থী ছিলেন। তারা তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন। আমরা আজকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জয়েন্ট কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। আশাবাদী দু’টি জনসভায় অনুমতি পাবো।
সমাবেশ কোথায় করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ঢাকা দক্ষিণের জন্য তিন স্থানের কথা বলেছি। নয়াপল্টন বিএনপি অফিসের সামনে, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব মাঠ অথবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এ তিনটির যেকোনো একটি চেয়েছি। ঢাকা উত্তরে কারওয়ান বাজার সড়ক, মোহাম্মদপুর শহীদ পার্ক অথবা খিলগাঁও তালতলা মাঠ। আমরা আশা করছি, এ তিনটির যেকোনো একটিতে সমাবেশ করার ব্যাপারে প্রশাসন আমাদের সহায়তা করবে।
এ সময় এ্যানির বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, কথাটা একটু ভুল হয়েছে। আমরা অনুমতি চাইতে আসিনি। আমাদের সংবিধানে কোথাও বলা নেই যে আমাদের অনুমতি নিয়ে সভা-সমাবেশ করতে হবে। আমরা সমাবেশ করবো, সেই সমাবেশে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারকে অবহিত করতে এসেছি।
তিনি বলেন, আমরা কার কাছে অনুমতি চাইবো, এ সরকারকেইতো আমরা বৈধতা দিচ্ছি না। বিনা ভোটে তারা ক্ষমতায় এসে অপশাসন-দুঃশাসন করছে। এর বিরুদ্ধেই আমাদের জন সমাবেশ। এখানে অনুমতির কোনো বিষয় আছে বলে আমি মনে করি না। দক্ষিণে ১৬ মার্চ ও উত্তরে ১০ মার্চ সমাবেশ করবো, এটাই ফাইনাল, এটাই করবো।
তাবিথ আওয়াল বলেন, আমরা আজকে ডিএমপির জয়েন্ট কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছি। ১০ মার্চ ঢাকা উত্তরে সমাবেশ করতে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত আশাবাদী সমাবেশটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে করতে পারবো।
পুলিশ অনুমতি না দিলে কী করবেন জানতে চাইলে তাবিথ আওয়াল বলেন, আমরা আশাবাদী প্রশাসনের সহায়তায় সমাবেশ করতে পারবো।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ৬ সিটি করপোরেশনে বিএনপি থেকে মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন জাতীয় প্রেসক্লাবে। ওই সংবাদ সম্মেলনে ছয় মেয়র প্রার্থী অভিযোগ করেন, দেশে নির্বাচনের নামে প্রহসন চলছে। সরকার নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তাই জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে ছয় মহানগরে সমাবেশ করা হবে। তারই অংশ হিসেবে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে প্রথম সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হলেও জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ওইদিন কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসূচি থাকায় সেটি বাতিল করা হয়। পরে ১৮ ফ্রেব্রুয়ারি বরিশালে, ২৭ ফেব্রুয়ারি খুলনায় ও ১ মার্চ রাজশাহীতে সমাবেশ করেন ছয় মেয়র প্রার্থী। ঢাকার দু’টি সমাবেশ, ৩ মার্চ ও ৪ মার্চ করার ঘোষণা থাকলেও পরবর্তীতে পরিবর্তন করে ১০ ও ১৬ মার্চ নির্বারণ করা হয়।