এই সরকারের কোনো বৈধতা নেই বলে জানিয়েছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি।
তিনি বলেন, এই সরকারকে জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে। আমি বলতে চাই—অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরেপক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করুন।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
লেখক মুশতাক আহমেদ ও ফেনীর সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মোজাক্কির হত্যার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, লেখক মুশতাক আহমেদকে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে গ্রেফতার করে অন্যায়ভাবে কারাগারে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রথমেই বলেছিলাম, এটি রাষ্ট্রীয় মদদে হত্যাকাণ্ড হয়েছে। আমরা বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছি। শুধু একটি নয়, এই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে প্রায় ৭০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইতোপূর্বেও শুধু সরকারের সমালোচনা বা কার্টুন প্রকাশের কারণে ৭ বছরের শিশু থেকে শুরু করে গৃহবধূকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা।
তিনি বলেন, এই সরকার সম্পূর্ণ একটি অবৈধ সরকার। অনির্বাচিত সরকার। তাদের জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে। টিকে থাকার জন্যই এই ধরনের গণবিরোধী আইন তারা তৈরি করেছে। এই আইনের মাধ্যমে জনগণের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আজকে এই সমাবেশ থেকে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে সবার মুক্তি দাবি করছি। যেসব রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিনাকারণে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মুক্তি দাবি করছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকারকে সরাতে হবে। কারণ এরা জনগণের নির্বাচিত সরকার নয়। এই সরকারের কোনো বৈধতা নেই। আমরা বিশ্বাস করি জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনেই এই সরকরের পতন হবে। এরা সব প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে। খুলনায় রাজশাহীতে বাস বন্ধ করে দিয়ে সমাবেশ বন্ধ করার চেষ্টা করেছে। বরিশালে একই কায়দায় বন্ধ করতে চেয়েছিল, কিন্তু বন্ধ করতে পারেনি। জনতার উত্তাল জোয়ার সমাবেশ সফল করেছে।
তিনি বলেন, আমি পরিষ্কার বলতে চাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রেখেছেন, তাকে অবিলম্বে মুক্তি দিন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছেন সেই সাজা প্রত্যাহার করতে হবে। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা গায়েবি মামলা আছে তা সব প্রত্যাহার করতে হবে। অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের দাঁড়াতে হবে। শক্ত হয়ে দাঁড়াতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়াতে হবে। আসুন সব রাজনৈতিক দল একসাথে প্রতিবাদ জানাই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই কারণে আমরা দেশ স্বাধীন করিনি। আজকে ৫০ বছর পালিত হচ্ছে। এই স্বাধীনতার জন্যে নয়। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ চেয়েছি। আমরা কথা বলার অধিকার চেয়েছি। স্বাধীনভাবে বসবাস করতে চেয়েছি। লুটপাটের বাংলাদেশ আমরা চাইনি, ডাকাতির বাংলাদেশ আমরা চাইনি। মাফিয়াদের বাংলাদেশ চাইনি। আজকে দেশে মাফিয়া রাজত্ব চলছে।
যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, যুবদল নেতা মোরতাজুল করিম বাদরু, নুরুল ইসলাম নয়ন, রফিকুল আলম মজুন, মামুন হাসান, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।