খেজুরের গুড় মুলত খেজুরের রস থেকে তৈরি করা হয়। বাংলা অগ্রহায়ণ মাস থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয়। খেজুরের রসকে উত্তাপের মাধ্যমে ঘন ও শক্ত পাটালিগুড়ে পরিণত করা হয়। ধরন অনুযায়ী খেজুরের গুড়কে ঝোলা গুড়, দানাগুড়, পাটালি, চিটাগুড় ইত্যাদি ভাগে ভাগে ভাগ করা যায়।
শীতের পিঠা-পুলি ও মিষ্টি তৈরির জন্য এর গুরুত্ব অনেক। রাজশাহী অঞ্চলে পর্যাপ্ত খেজুরগাছ থাকায় শীতের ভোরে ঘরে ঘরে তৈরি হয় এ গুড়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এদিকে, কৃষকরা বলছেন, উৎপাদনের পাশাপাশি ভালো দামও পাচ্ছেন তারা। কুয়াশার চাদরে মোড়ানো ভোর। সূর্যের আলোর ছটায় দিন জানান দিচ্ছে। তখনই গাছিরা ব্যস্ত খেজুরের রস সংগ্রহে। রস নামিয়ে নিয়ে যান গুড় তৈরির প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত চুলার কাছে।
রস ছেঁকে শুরু হয় জ্বাল দিয়ে গুড়ের দানা তৈরি। রসের ঘ্রাণ টিকিয়ে রাখা গুড় তৈরির মুনশিয়ানা। তবেই বাজারে দাম বাড়ে গুড়ের। খুরি ও পাটালি আকারের গুড় জেলার চারঘাট, দুর্গাপুর, পবা, পুঠিয়া থেকে আনা হয় বানেশ্বর হাটে। প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৬৫ থেকে ৯৫ টাকা পর্যন্ত। এখান থেকেই জেলার গুড় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যান বেপারিরা।
আর এ হাটে সপ্তাহে দুদিন প্রায় দেড় কোটি থেকে দুই কোটি টাকার গুড়ের বেচাকেনা হয়। বানেশ্বর গুড়হাটের ইজারাদার বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বেপারিরা এখানে গুড় কিনতে আসেন। আমাদের এই হাটে বেপারিদের থাকার ব্যবস্থা আছে। নিরাপত্তার ব্যবস্থা আছে। এখানে ন্যায্যমূল্যে গুড় বেচাকেনা হয়। এ হাটে সপ্তাহে প্রায় দেড় কোটি টাকার গুড় বেচাকেনা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, জেলায় খেঁজুরগাছ আছে প্রায় ৮ লাখ। এসব গাছ থেকে ৮ হাজার টন গুড় উৎপাদন হয়। যার বাজারমূল্য ৬০ কোটি টাকা।