একটি বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভেঙে বাণিজ্যিক স্টল নির্মাণ, এক নারীর ওপর নির্যাতন চালিয়ে চুল কেটে দেওয়াসহ নানা অভিযোগে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন মৌসুমি কেকাকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে শহরের টাউন হলের দলীয় কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভার সিদ্ধান্ত রেজুলেশন করে কেন্দ্র পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম।
এ সভায় উপস্থিত কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা জানান, শারমিন মৌসুমি কেকার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতেই জেলা আওয়ামী লীগ জরুরি সভা করেছে। দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে শারমিন মৌসুমি কেকা সংগঠনবিরোধী কার্যক্রম চালাচ্ছেন। বিভিন্ন অপকর্ম করে জেলা আওয়ামী লীগের সুনাম ক্ষুন্ন করছেন তিনি। সভায় অংশ নেওয়া নেতৃবৃন্দ কেকাকে দল থেকে বহিষ্কার করার জন্য সুপারিশ করেন। ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর নির্দেশেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলেও দলীয় একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সহ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, যুগ্মসম্পাদক মজিবুর রহমান, তরুণ কর্মকার ও দপ্তর সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম। সভায় বক্তারা প্রত্যেকেই শারমিন মৌসুমি কেকার সমালোচনা করেন। কেকা বিএনপি নেতার সঙ্গে মিলে যেসব কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন তা দলের জন্য ক্ষতিকর ও আমির হোসেন আমুর জন্যও বিব্রতকর। এসব কাজে সাংসদের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে বলেও জানান তারা। কেকাকে এখনই থামিয়ে না দিলে তিনি আওয়ামী লীগের সম্মান নষ্ট করে ফেলবে। তাই দল থেকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ আগস্ট এক নারীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় ও নির্যাতনের পরে চুল কেটে দেওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন মৌসুমি কেকা ও শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান তাপুসহ ৬ জনের নামে গত ১৭ আগস্ট ঝালকাঠি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা হয়। আদালতের নির্দেশে রাতেই সদর থানায় মামলাটি লিপিবদ্ধ হয়।
এদিকে, ঝালকাঠির সুগন্ধা পৌর আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভেঙে ও খেলার মাঠ নষ্ট করে অবৈধভাবে বাণিজ্যিক স্টল নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে শারমিন মৌসুমি কেকার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন কেকা। তার বিরুদ্ধে বিতর্কিত নেত্রী পাপিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগও রয়েছে।
ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মো. শাহ আলম বলেন, যেহেতু কেকার কর্মকাণ্ডে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তাই বিষয়টি নিয়ে আমরা বিব্রত। এখানে দলের সম্মানের প্রশ্ন, তাই জরুরি সভা করেছি। সভায় সকলেই তাকে বহিস্কারের বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। তাই সিদ্ধান্ত রেজুলেশন করে কেন্দ্রে পাঠানো হবে।