বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন যে, লকডাউন খুলে দিয়ে সরকার মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আজশুক্রবার (৮ মে) গাজীপুর মহানগর যুবদলের উদ্যোগে টঙ্গী বাজার এলাকায় ত্রাণ বিতরণের সময় তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে মানুষের মরদেহ রাস্তাঘাটে পড়ে থাকছে। টেস্ট করার কোনো উপায় নেই। পর্যাপ্ত মেডিক্যাল সহায়তা নেই। এটা সরকার খেয়াল করছে না। এটার কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না সরকার। মানুষের জীবন তাদের কাছে বড় নয়। তাদের কাছে টাকা অনেক বড় কথা। যে খাদ্য ছিল তা দিয়ে দুই-তিন মাস গরিব মানুষকে চালাতে পারতাম। বাড়িতে বাড়িতে খাদ্য পৌঁছে দিতে পারতাম না। নিশ্চয়ই পারতাম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনীকে দিয়ে যারা গার্মেন্টসে কাজ করে, দিন আনে দিন খায়, রিকশাচালক তাদের সবাইকে দিতে পারতাম। সরকার ওইদিকে যায়নি। সরকারের কথা হচ্ছে মানুষ মরুক আমার কিছু যায় আসে না। আমার হাতে টাকা থাকলেই বড় বিষয়।’
প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘পর্যাপ্ত মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট না পেয়ে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স মারা যাচ্ছে। যারা প্রতিবাদ করছে তাদের বরখাস্ত করা হচ্ছে, চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ডাক্তার আবদুল্লাহ বলেছেন, এটা করা ঠিক হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী একটি কমিটি করেছেন করোনা প্রতিরোধের জন্য। বিশেষজ্ঞ কারিগরি কমিটি। তারাও বলছেন, আপনি পুনঃবিবেচনা করুন এখন লকডাউন খুলবেন না। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সারা পৃথিবীর মধ্যে করোনায় ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ। কিন্তু সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীর কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। আজকে রাস্তাঘাট খুলে দেওয়া হয়েছে, যানবাহন চলছে, গার্মেন্টস খুলে দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার লোক কাজে যাচ্ছে। এতে কত লোক করোনায় আক্রান্ত হবে। তাদের না থাকবে চিকিৎসা, না থাকবে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা। মৃত্যুর দিকে মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার। এ সরকার এ রকম পরিস্থিতির মধ্যে দেশ পরিচালনা করছে। এ পরিচালনা হচ্ছে ধ্বংসের পরিচালনা, পরিচালনা হচ্ছে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার পরিচালনা।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘লাকডাউনে গরিব মানুষ, কৃষক-শ্রমিক, দিন আনে দিন খায় তাদের চলবে কী করে। পেটের আগুন দাউদাউ করে জ্বলে এটা কিছুই মানতে চায় না। আমাদের দল বিএনপিকে বলেছি, সারাদেশের মানুষের সঙ্গে থাকতে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দুই বছর অন্যায়ভাবে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছিল। তিনি আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন সারাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে। বিএনপর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সারাদেশের প্রতিনিয়ত খোঁজখবর রাখছেন। আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন সবস্তরের নেতাকর্মীরা যেন মানুষের পাশে দাঁড়ায়। বিএনপির নেতাকর্মীরা খাবেন, অন্যরা খাবে না এমন যেন না হয়। আমরা সেটাই চেষ্টা করছি। নিজেদের টাকায় কেনা ১৩ লাখ পরিবারকে সহায়তা করেছি। বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলের নেতাকর্মীরা সারাদেশে ত্রাণ বিতরণ করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারে নেই, আমরা সরকারের জুলুমের মধ্যে আছি। আমাদের অনেক ছাত্রদল, যুবদল নেতাকে গ্রেফতার করছে। কেন তারা মানুষকে ত্রাণ দিচ্ছে।’
ত্রাণ বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন- গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সকার জাবেদ আহমেদ, গাজীপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি প্রভাষক বশির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ভাট, সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আরিফ হোসেন হাওলাদারসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।