সরকার যে শাটডাউন তুলে নিচ্ছে, এতে করে দেশ আরো ভয়ংকর পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। এটা কেন করছে? আমাদের কাছে যেটা মনে হয়, তাদের অজ্ঞতা, অদূরদর্শিতা, উদাসীনতা এবং জনগণের কাছে জবাবদিহিতা না থাকার কারণেই এটা করছে তারা বলে জানিয়েছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজকে দেশে সত্যিকার অর্থে জনগণের নির্বাচিত সরকার থাকলে কিন্তু এটা করা সম্ভব হতো না।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারিকৃত এই প্রজ্ঞাপনে সরকার রমজান ও ঈদের কথা বলে প্রথমে তাৎক্ষণিকভাবে এবং পরবর্তিতে সিদ্ধান্ত বদলে ১০ মে থেকে দোকান-পাট খুলে দিয়েছে পারস্পরিক দূরত্ব ও অন্যান্য প্রতিপালন সাপেক্ষে- এটা আমাদের কাছে বোধগম্য না। কাকে সুযোগ করে দিচ্ছেন?
তিনি বলেন, শপিং মল খুলে দিচ্ছেন খুব ভালো কথা। ঈদে যে মানুষগুলো কাজ করে, কাপড় তৈরি করে, কেনা-বেচা করে ছোট-বড় ব্যবসায়ী তাদের জন্য দরকার, প্রয়োজন আছে। কিন্তু সেটা কি আমার মানুষের জীবনের বিনিময়ে? একটা মাস কি সেটা নিয়ন্ত্রণ করা যেতো না, একটা মাস নিয়ন্ত্রণ করে সুযোগ সৃষ্টি করা যেতো না? আসলে সরকার ব্যর্থ হয়েছে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যর্থতার কারণে আজকে দেশকে এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষের জীবন-জীবিকা দুইটাই যেমন ঠিক রাখতে হবে, সংক্রামণ যেহেতু এখনো ঊর্ধ্বমুখী, সেহেতু আরো কিছুদিন ধরে অবরুদ্ধ সমাজিক দূরত্ব নীতিমালা কঠোরভাবে পালন করা উচিত ছিলো। কারখানাগুলো এমনভাবে খোলা যেতে পারতো যে, ধীরে ধীরে একটা কারখানায় সকল ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করে, শ্রমিকদের যে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সেটা নিশ্চিত করেই কারখানাগুলো করা যেতো। সেটা তো করা হয়নি। কোনো রকমের দূরদর্শিতার প্রমাণ সরকারের দেখতে পাইনি।
তিনি বলেন, সরকার কোথায়? আমি তো এখন দেখছি যে, সরকার এখন রাস্তাতেও নেই। অর্থাৎ গোড়ায়-আগায়, মনে-গোপনে, কার্যালয়ে নেই।
তিনি আরো বলেন, সরকার এক জায়গায় আছে, সেটা শুধু টেলিভিশনে। আর কিন্তু তারা কোথাও নেই। আপনি খেয়াল করে দেখবেন- এভরি বডি ইজ ইন দি টেলিভিশন, নো বডি ইজ এ্যানি হোয়ার।
সংকট মোকাবিলায় বিরোধী দলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ এবং স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদদের নিয়ে ট্রাস্ক ফোর্স গঠন করার দাবি কর্ণপাত না করায় সরকারের সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান ও শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।