ব্যক্তিগত অসুস্থার কারণ দেখিয়ে ছুটির বিষয়ে প্রধান বিচারপতির নীরবতা ‘শ্বাসরুদ্ধকর’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি আয়োজিত বিচার বিভাগের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা ও আজকের প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দুদু বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়েছিলেন অপ্রত্যাশিতভাবে। পরে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেছেন। এখানে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, যাকে নিয়ে বিরোধী দল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তার উপস্থিতির ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, আর সরকার আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে, তিনি ঠিকই আছেন।’
তিনি বলেন, ‘আরও একটি লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে তিনি বাসা থেকে বের হয়ে মন্দিরে পূজা দিয়েছেন। কোর্টে গেছেন কিন্তু তিনি ছুটি নিয়েছেন কি না বা অসুস্থ কি না- এ ব্যাপারে কোনো কথা না বলে নীরব থেকেছেন। প্রধান বিচারপতির এই না বলা কথাটা আমাদের কাছে মনে হয়েছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং শ্বাসরুদ্ধকর।’
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, সরকারের রোষানলে পড়ে যারা এর আগে গুম হয়ে পরে জীবন নিয়ে ফেরত এসেছেন, সর্বশেষ কলামিস্ট ফরহাদ মজহার ফিরে এসে গণমাধ্যমে কোনো কথা বলেন বা লেখেননি। একেবারে নীরব হয়ে গেছেন। আমাদের প্রধান বিচারপতি একই পরিণতি ভোগ করলেন কি না আমি ঠিক বলতে পারব না। তবে পূর্ব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমার কাছে মনে হয়েছে বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখন কথা বলা খুব বিপদ। খুবই কঠিন একটা সময় আমরা অতিক্রম করছি।’
দেশের মধ্যে বর্তমানে যা হচ্ছে তা কোনো স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে প্রত্যাশা করা যায় না দাবি করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এতদিন জানতাম বিএনপি-ছাত্রদলের নেতাদের বিনা ওয়ারেন্টে বিনা মামলায় ধরে নিয়ে রিমান্ডে নেয়া হয়। এগুলো আমাদের আতঙ্কিত করেছিল। সর্বশেষ যে প্রসঙ্গটি সামনে এসেছে সেটি হচ্ছে প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে। হঠাৎ করেই আমরা জানতে পারি তাকে ছুটি দেয়া হয়েছে। দেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল বলছেন, প্রধান বিচারপতি কেন ছুটি নিয়েছেন এটা তিনি জানেন না। বারের নির্বাচিত নেতারা প্রথম দিকে তার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। পুলিশ তাদের বাধা দিয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তিনি বলেন, ভারত ও চীন রোহিঙ্গা প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। ভারত তো আমাদের গলায় বাঁধা বন্ধু, আমরা তো না খেয়েও তাদের খেতে দেই। আমাদের মারলেও কিছু বলি না। কিন্তু মিয়ানমার যখন রোহিঙ্গাদের মারা শুরু করল তখন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মিয়ানমারের প্রধান রাষ্ট্রীয় পরামর্শদাতা অং সান সু চির হাত ধরে বললেন, ‘আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।’
আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান আবু তাহের চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সাবেক কাউন্সিলর লায়ন এম এ রশিদ শাহ সম্রাট, ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক আব্দুস ছাত্তার পাটোয়ারী, গণসংস্কৃতি দলের সভাপতি এস-আল মামুন, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, ০৭ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসএফ