ক্ষমতাসীনদের আত্মাসাতের কারণেই সারাদেশে ত্রাণ নিয়ে হাহাকার চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার সকালে ‘ফিউচার অব বাংলাদেশ’ নামক সংগঠনের উদ্যোগে ঘরে ঘরে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছিয়ে দেওয়ার এক কর্মসূচির উদ্বোধন করতে গিয়ে এ কথা বলেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘‘আজকে সরকারি যে ত্রাণ, এই ত্রাণ আত্মাসাত হয়ে যাচ্ছে। কাদের দ্বারা? এই সরকারি দলের লোকদের দ্বারা। হাহাকার করছে খুলনার রেল স্টেশনের শ্রমিকরা একটু ত্রাণের জন্য। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের নার্সরা খাবার পাচ্ছে না। অথচ ক্ষমতাসীন দলের লোকজনদের বাড়িতে চাল বোঝাই হয়ে যাচ্ছে। কার চাল? জনগণের চাল। তাদের টাকায় কেনা চাল।”
সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘‘যখন সকল মহল থেকে বলা হচ্ছে যে, সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এই মহামারী মোকাবিলা করতে হবে। তখন আমরা দেখতে পাচ্ছি সরকার একগুঁয়েমি করছে। একতরফাভাবে কাজ করতে গিয়ে শুধুমাত্র নিজের দলের লোকজনদের পেট ভরানোর কাজটা গত ১০ বছর ধরে যেভাবে করেছেন এখনও সেটাই করছে। যখন মানুষ রাস্তায় মরে পড়ে থাকছে, মানুষ একটু খাবারের জন্য হাহাকার করছে। রেল স্টেশনে, পথে-ঘাটে একটু ত্রাণের আশায় মানুষ দিনের পর দিন গ্রীষ্মের প্রখর রোদের মধ্যে অপেক্ষা করছে, তারা ত্রাণ পাচ্ছে না। ত্রাণ লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। আমরা এখনও বলছি- জনগণের এই দুর্দশা লাঘব করার জন্য সকলকে একসাথে এগিয়ে এসে কাজ করতে হবে।”
তিনি বলেন, ‘‘আজকে যারা সরকারে আছেন তাদের প্রধান দায়িত্ব এই কাজটা করা। অথচ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী তারা নানার কথা বলছেন- না এাণ চুরি হচ্ছে না, চাল চুরি হচ্ছে না। আমরা ঠিক মতোই দিচ্ছি। প্রতিদিনই আপনারা গণমাধ্যম খুলে দেখবেন-শুধুমাত্র চাল চুরির ঘটনা, শুধুমাত্র ত্রাণ আত্মসাতের ঘটনা। আর ওদিকে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে একটু ত্রাণের আশায়, দুঃস্থরা হাহাকার করছে।”
করোনাভাইরাস সংক্রামণে সরকারের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি এখনও নেই উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘‘আমরা দেখছি, স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তাদের ছাঁটাই করা হচ্ছে। কেন করা হচ্ছে? বিভিন্ন অজুহাত তুলে এই ছাঁটাই করা হচ্ছে। অথচ ডাক্তারদের নিরাপত্তার বিধান করা হচ্ছে না, নার্সদের নিরাপত্তা বিধান করা হচ্ছে না। তারা খেতে পারছেন না। আপনি আপনার একনায়কতন্ত্রের যে আচরণ, সেই আচরণটা অব্যাহত রেখেছেন। এভাবে বিশ্বব্যাপী এই মহামারীর তাণ্ডব-প্রাদুর্ভাব মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এখনও সময় আছে, সরকার সমন্বিত উদ্যোগ নেবেন ঐক্যবদ্ধভাবে যাতে, এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায় সকলকে সচেতনতার মধ্য দিয়ে, দুঃস্থ মানুষের বাড়িতে গিয়ে যাতে ত্রাণ পৌঁছিয়ে দেওয়া যায় সেই ব্যবস্থাটাই গ্রহণ করবেন।”
ফিউচার অব বাংলাদেশ এর এই উদ্যোগের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। রাজারবাগে ইন্টার্ন পয়েন্টের কাছে একটি বাসার সামনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ফয়সাল সালামের নেতৃত্বাধীন এই সংগঠনটি সারাদেশের বিভাগীয় পর্য়ায়ে দুঃস্থদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌঁছিয়ে দেওয়ার কর্মকাণ্ড গ্রহণ করেছে।
পরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কয়েকজনকে ত্রাণ দেন রিজভী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফিউচার অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শওকত আজিজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাজেদ বিন হাসান, কে জি সেলিম, সদস্য নাহিদ রহমান পুতুল, রবিকুল হাবিব প্রমুখ।