দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে পুরোপুরি অনুসরণের তাগিদ দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেছেন, সুপরিকল্পিতভাবে জিয়াউর রহমানকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভিলেন বা খলনায়ক হিসেবে দেখানো হচ্ছে। রোববার রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে এক স্মৃতি স্মারক ও দেয়ালিকা প্রদর্শনী উদ্বোধন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত এই প্রদর্শনীর স্লোগান ছিল ‘আঁধারের সাথে দ্বন্দ্ব।’
জিয়াউর রহমানের সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকের প্রজন্ম জিয়াউর রহমান সম্পর্কে কিছুই জানে না। ইংলিশ মিডিয়ামের বাচ্চারা, যারা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা করে তাদের কাছ থেকে আমি শুনেছি- সেখানে জিয়াউর রহমানকে ভিলেন হিসেবে দেখানো হয়। এটা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত। কারণ তার মূল অবদানটাই হচ্ছে, বাংলাদেশকে একটি স্বতন্ত্র মূলনীতি দেওয়া।’
বিএনপি মহাসচিব এসময় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন ভোটের দাবি জানান। বলেন, ‘এই দখলদার সরকারকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, অবিলম্বে এই নির্বাচন বাতিল করুন, বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় জনগণ তাদের ন্যায্য দাবি আদায় করে নেবে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব, যারা জিয়াউর রহমান ও রাজনীতিকে ভালোবাসি এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করি, তাদের দায়িত্ব হচ্ছে- জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করা। এটা আমাদের একমাত্র দায়িত্ব।’ আর সেই আন্দোলনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকার জন্যও নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন সময় ও কালটা বলা হয় একটা দুঃসময় এবং একটা সংকটকাল। আর সবাই বলে এই সংকট বিএনপির। কিন্তু এটা কোনো বিএনপির সংকট নয়। এই সংকট হচ্ছে জাতির। বাংলাদেশ জাতি তার সমস্ত অর্জনকে হারিয়ে ফেলছে। ৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। কিন্তু এখন কি আমরা বাংলাদেশকে স্বাধীন বলতে পারবো? পারি না। কারণ বাংলাদেশ এখন নতজানু হয়ে গেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা জিয়াউর রহমানকে অনুসরণ করছি এবং করবো। আর আমাদের উচিত হবে তার একটি অংশ নয়, পরিপূর্ণভাবে জিয়াউর রহমানকে অনুসরণ করা। সেটাই হবে জিয়াউর রহমানের প্রতি সত্যিকার অর্থে শ্রদ্ধা জানানো।’
মির্জা আলমগীর বলেন, ‘দল, বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতিকে টিকিয়ে রাখার মূলমন্ত্র হচ্ছে, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। সুতরাং আমাদের উচিত হবে জিয়াউর রহমানের জীবনের ওপর আলোচনা শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক না রেখে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া।’
অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমানের ৪৯টি আলোকচিত্র এবং জিয়া নিহত হওয়ার পর পত্রিকার প্রকাশিত আটটি সংবাদ প্রদর্শন করা হয়।
আয়োজক সংগঠনের পরিচালক বাবুল তালুকদারের সভাপতিত্বে প্রদর্শনীতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
লেটেস্টবিডিনিউজ/এসকেবি