নানা আলোচনা-সমালোচনা ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগত টানাপোড়েনের মধ্যে বিএনপি থেকে শপথ নেয়া নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের ‘চাপের চেয়ে লাভ বেশি’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
বিএনপির সংসদে শপথগ্রহণের সিদ্ধান্তকে আবারও প্রশ্নবিদ্ধ করে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেছেন, ‘বিএনপি শুরু থেকেই বলছে, পার্লামেন্টে যাবে না। তাহলে আবার পার্লামেন্টে গেলাম কেন? এখান থেকে বুঝতে হবে আমাদের প্রতিশ্রুতির অভাব আছে। আমরা অবাধ্যকে বাধ্য করতে পারি না। কারণ তাদের (শপথগ্রহণকারী) দলের প্রতি রাজনীতির প্রতি কোনও প্রতিশ্রুতি নাই। এই ৫টা লোককে আমরা যদি বাধ্য করতে পারতাম তাহলে আজকে আপনাদের এই দুঃখটা থাকতো না। মানুষের কাছেও আজকে জবাব দিতে হতো না।’
শুক্রবার (৩১ মে) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভায় দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ৩৮তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী তাঁতীদল এ আলোচনা সভায় আয়োজন করে।
সভায় গয়েশ্বর বলেন, ‘পার্লামেন্টে যাওয়াতে চাপ আছে। চাপের চেয়ে লোভ বেশি আছে। অথচ এই ৫ সংসদ ‘খালেদা জিয়া মুক্ত হলেও পার্লামেন্টে যাবো না’ এ কথাটি কি ৫ জনের একজন বলেছে একদিন? বলেনি। তাহলে তাদের কাছে পার্লামেন্টটাই জরুরি, খালদা জিয়ার মুক্তি জরুরি না।’
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘ভোট যদি রাতের আধারে চলে যায় সবারই বদনাম হয়। সামাজিক ক্ষেত্রেও অনেক অন্যায় আবদার মেনে নিতে হয়। এখন এই ৫ জন যদি দল ছেড়ে চলে যেতো! চলে যেতো না, যেতোই। সেই কারণেই আমাদের প্রেক্ষাপটও বুঝতে হবে, বর্তমান অবস্থাটাও বুঝতে হবে।’
দলটির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আইন আছে আইনের প্রয়োগ নাই। বিচার বিভাগ যদি স্বাধীন হতো বিবেকতাড়িত হতো খালেদা জিয়াকে ১৪ মাস না ১৪ দিনও জেলে থাকতে হতো না। আমি ধরে নিলাম উনার সাজা হয়েছে। এরকম সাজাপ্রাপ্ত লোকের সংখ্যা বাংলাদেশে শত শত হাজার হাজার। তারা জামিনে মুক্ত, কিন্তু খালেদা জিয়ার জামিন হচ্ছে না কেন?’
গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘সম্প্রতি লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, তারেককে বেশি বাড়াবাড়ি না করতে। বাড়াবাড়ি করলে নাকি তার মাকে (খালেদা জিয়া) আর ছাড়া হবে না। তার মানেটাও তাহলে স্পষ্ট- বেগম জিয়াকে এখন কারাগার থেকে ছাড়ার মালিক আদালত নয়, স্বয়ং শেখ হাসিনা। এটা কি আদালত অবমাননা নয়? আদালত কি শেখ হাসিনাকে তলব করেছেন? কেন লন্ডনে এমন বক্তব্য দিলেন সেটা কি জিজ্ঞেস করেছেন?’
জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের আহ্বায়ক আবুল কালামের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের বক্তব্য দেন, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, তাঁতী দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ড.কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও কৃষকদলের সদস্য এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
লেটেস্টবিডিনিউজ/এনপিবি