পিরামিড মানেই নানা রহস্য লুকিয়ে রয়েছে তার গভীরে। তার কিছু হয়েছে আবিষ্কার, আর কিছু রয়ে গেছে অন্তরালে। এবার গিজার ৪৫০০ বছরের পুরনো গ্রেট পিরামিডের প্রধান প্রবেশদ্বারের কাছে নয় মিটার (৩০ ফুট) লম্বা একটি লুকানো করিডোর আবিষ্কার করলেন বিজ্ঞানীরা। মিশরীয় পুরাকীর্তি নিয়ে চর্চাকারী কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে আরো অনুসন্ধান করবেন বলে জানিয়েছেন।
পিরামিড প্রাচীন বিশ্বের সাতটি আশ্চর্যের মধ্যে একটি। পিরামিডের রহস্যের খোঁজে ২০১৫ সাল থেকে স্ক্যান পিরামিড নামে একটি প্রকল্পের কাজ চলছিল। ইনফ্রারেড থার্মোগ্রাফি, থ্রি -ডি সিমুলেশন এবং কসমিক-রে ইমেজিং- এর মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে রহস্যের সন্ধানে নেমেছিলেন বিজ্ঞানীরা। তখনি এই করিডোরের সন্ধান পান তারা। নেচার জার্নালে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে যে, করিডোরের সামনে চুনাপাথরের কাঠামো দেখতে পাওয়া গেছে। ২৫৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ফারাও খুফু বা চেওপসের শাসনামলে গ্রেট পিরামিড একটি স্মৃতিস্তম্ভ হিসাবে নির্মিত হয়েছিল।
১৪৬ মিটার উচ্চ গ্রেট পিরামিডটির উচ্চতা এখন ১৩৯ মিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। ১৮৮৯ সালে প্যারিসের আইফেল টাওয়ার নির্মাণের আগে পর্যন্ত মানুষের দ্বারা তৈরি করা সবচেয়ে উঁচু কাঠামো ছিল এই গ্রেট পিরামিড। মিশরের সুপ্রিম কাউন্সিল অফ অ্যান্টিকুইটিজের প্রধান মোস্তফা ওয়াজিরি বলেছেন অসমাপ্ত করিডোরটি সম্ভবত পর্যটকদের দ্বারা ব্যবহৃত মূল প্রবেশদ্বারের প্রায় সাত মিটার দূরে অবস্থিত । পিরামিডের ভিতর করিডোরটি তৈরি হওয়ার দুটি কারণ থাকতে পারে। এক, ভিতরে প্রবেশের মূল দরজার চারপাশে পিরামিডের ওজন পুনর্বণ্টন করে দেয়ার জন্য, অথবা ওই করিডোর দিয়ে অন্য কোনও অনাবিষ্কৃত গোপন ঘরে পৌঁছানোর জন্য।
মোস্তফা ওয়াজিরি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা এই করিডোরের শেষ প্রান্তে পৌঁছানোর জন্য স্ক্যানিং চালিয়ে যাবেন। পিরামিডের অন্য অংশে ফারাওর সমাধি কক্ষের উপরে পাঁচটি কক্ষও বিশাল কাঠামোর ওজন পুনরায় বিতরণ করার জন্য নির্মিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়। সম্ভবত ফারাওর একাধিক সমাধিকক্ষ ছিলো। বিজ্ঞানীরা কসমিক-রে মিউওন রেডিওগ্রাফির মাধ্যমে করিডোরটি শনাক্ত করেছেন। ২০১৭ সালে, স্ক্যান পিরামিডের গবেষকরা গ্রেট পিরামিডের ভিতরে কমপক্ষে ৩০ মিটার দীর্ঘ একটি শূন্যস্থান আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এটি ১৯ শতকের পর থেকে পাওয়া প্রথম প্রধান অভ্যন্তরীণ কাঠামো।
সংবাদ সূত্রঃ হিন্দুস্থান টাইমস