দেশে এসে পৌঁছেছে চীনের সিনোফার্ম থেকে বাংলাদেশ সরকারের কেনা করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম চালান। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম জানান, চীন থেকে টিকা নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার পর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
মাইদুল ইসলাম বলেন, “এখন ১০ লাখ ডোজ টিকা এসেছে। কাল (শনিবার) সকালে আরেকটি ফ্লাইটে আরও দশ লাখ ডোজ টিকা আসবে।”
বিমানবন্দরে টিকা বুঝে নিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন। সিনোফার্মের কাছ থেকে দেড় কোটি ডোজ টিকা কিনেছে বাংলাদেশ। তিন মাসের মধ্যে এই টিকা দেশে আসার কথা বলে এর আগে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল।
সিনোফার্মের তৈরি ১১ লাখ ডোজ টিকা চীন সরকার এর আগে দুই দফায় উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে পাঠিয়েছিল। সেই টিকা দিয়ে বৃহস্পতিবার সারা দেশে জেলা পর্যায়ে আবারও গণ টিকাদান শুরু হয়েছে।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের তিন কোটি ডোজ কেনার জন্য গত বছরের শেষ দিকে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। সেই টিকার প্রথম চালান পাওয়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান শুরু হয়। কিন্তু সেরাম ইনস্টিটিউট দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠানোর পর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে টিকার সঙ্কটে পড়ে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় ২৫ এপ্রিল দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
এ অবস্থায় সরকার অন্য উৎস থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করে। ২৭ মে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় প্রতি ডোজ ১০ ডলার দরে সিনোফার্মের দেড় কোটি ডোজ টিকা কেনার প্রস্তাব সবুজ সংকেত পায়। সিনোফার্ম হল দ্বিতীয় কোম্পানি, যাদের কাছ থেকে টিকা কিনছে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়া টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে ফাইজার ও মর্ডানার টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ।
এর মধ্যে মডার্নার তৈরি ১৩ লাখ ডোজ টিকা শুক্রবার রাতেই দেশে পৌঁছায়। শনিবার সকালে আরও ১২ লাখ ডোজ এসে পৌঁছাবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের জানান। টিকার সঙ্কটে দেশে গণ টিকাদান কর্মসূচিতে ছন্দপতনের কথা তুলে ধরে জাহিদ মালেক বলেন, “এসব টিকা আসায় সারাদেশে গণটিকাদান কর্মসূচি আবার গতি পাবে। ডিসেম্বর নাগাদ বিভিন্ন উৎস থেকে ১০ কোটি ডোজ টিকা আসবে, যা দিয়ে আরও ৫ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া যাবে।”
জুলাই মাসে বাংলাদেশ সিনোফার্মের কাছ থেকে ২০ লাখ ডোজ টিকা পাবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আগামী মাসে আরও বেশি টিকা আসবে বলে আমরা আশা করছি। সেটা ৩৫ থেকে ৪০ লাখ ডোজ হতে পারে।” স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসিঅ্যান্ডএইচের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো.শামসুল হক বলেন, “এসব টিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্টোরেজে নিয়ে রাখা হবে।”