হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে সহিংসতা ও সোনারগায়েঁ মাওলানা মামুনুল হক কাণ্ডে নারায়ণগঞ্জ জেলার তিন থানায় মোট ১৬টি মামলা দায়ের হয়েছে। রোববার (১১ এপ্রিল) পর্যন্ত এসব মামলায় প্রায় ৬৫ জনকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম।
তিনি জানান, ২৮ মার্চ হেফাজতের হরতালে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ও সাইনবোর্ডে ব্যাপক নাশকতা করেন হেফাজত কর্মীরা। এছাড়া গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে মামুনুল হকের নারীসহ অবরুদ্ধের ঘটনার পর সহিংসতায় সোনারাগাঁয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালান তারা। এ দুটি ঘটনায় সোনারগাঁও থানায় ৮টি, সিদ্ধিরগঞ্জে ৭টি ও রূপগঞ্জে ১ মামলাসহ মোট ১৬টি মামলা হয়েছে।
এসব মামলায় রোববার বিকেল পর্যন্ত মোট ৫৩ জনকে আটক করা হয়েছে। রাতে আরও ১২ জনকে আটক দেখানো হবে। এসব মামলায় বাদী হয়েছেন পুলিশ সদস্য, র্যাব সদস্য, সাংবাদিক, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী এবং পরিবহন মালিকরা।
পুলিশ সুপার আরও জানান, হরতালে নাশকতা ও ভাঙচুরের আসামিদের ফেসবুকের পোস্ট, ভিডিও ফুটেজ ছাড়াও তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব মামলায় অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারে পুলিশের বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং তাদের মধ্যে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতের নেতাকর্মীরা রয়েছেন।
২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালের দিন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ, যানবাহনে ভাঙচুর, সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনা ঘটে। এছাড়া গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে রাখার প্রতিবাদে উপজেলার মোগরাপাড়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ, ওই রিসোর্ট ও আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় এক সাংবাদিককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে নির্যাতনের মুখে মামুনুল হকের কাছে ক্ষমা চাওয়াতে বাধ্য করার ঘটনাও ঘটে। ১৬ মামলায় বেশ কয়েকটিতে মামুনুল হককে প্রধান আসামি করে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত ও হেফাজতের আরও কয়েকশ’ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অন্তত ১৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।