দেশে ধর্ষণের মাত্রা বেড়েছে অতিরিক্ত। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ছোট বোনকে ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় বড় বোনকে কুপিয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। গত রবিবার রাতে ফতুল্লায় একটি ভাড়াটিয়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থানায় জিডি করায় সোমবার রাতেও কয়েক দফা হামলা চালায় তারা। ছুরিকাঘাতে আহত ওই তরুণীকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেয়া হয়। একদিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরেন তিনি। তার পেটে কয়েকবার ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন ওই তরুণী পরিবার। তার ছোট বোনকে দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার দুই কিশোর নানাভাবে উত্যক্ত করে আসছে। প্রায় সময় কুপ্রস্তাব দিতো তারা। এনিয়ে এলাকাবাসী জানতে পেরেও ভয়ে কিশোর অপরাধীদের কিছু বলতে পারতেন না। কারণ তাদের প্রত্যেকের হাতে দেশি বিদেশি অস্ত্র থাকে। সাধারণ বিষয়ে তারা অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া দেয়।
আহত তরুণী জানান, রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই দুই কিশোরসহ প্রায় ১০/১৫ জন কিশোর বয়সের ছেলে আমাদের বাসায় আসে। আমাদের এলাকায় তারা কিশোর অপরাধী হিসেবে পরিচিত। তারা যখন আমাদের বাসায় আসে তখন আমি গার্মেন্ট থেকে বাসায় এসেছি। কিশোররা এসেই আমাদের ঘরে প্রবেশ করে। প্রথমে এক কিশোর আমার বোনকে জড়িয়ে ধরে খাটে ফেলে দেয়। তখন আমি চিৎকার করে সেই কিশোরকে ধাক্কা দিয়ে বোনকে জড়িয়ে ধরি।
এসময় তারা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর আমার বোনকে টেনে হিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন আবারো আমি তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে কিশোরটি আমার পেটে কয়েকটি ছুরিকাঘাত করে দলবল নিয়ে চলে যায়। এসময় আমার মা-বোন ও ছোট ভাইসহ আশপাশের লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। এরপর ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক আক্রান্ত স্থানে ১৮টি সেলাই করে একদিন ভর্তি রাখেন।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় কিশোরদের ভয়ে থানায় গিয়ে তথ্য গোপন করে অভিযোগ না করে একটি জিডি করেছি। জিডির বিষয়টিও সেই কিশোর ও তার লোকজন জানতে পেরে সোমবার রাতে কয়েক দফা আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে টিনের ঘর ও দরজা জানালা কুপিয়ে জিডি উঠানের হুমকি দিয়ে চলে যায়। জিডি না উঠালে পরিবারের সকলকে কুপিয়ে হত্যা করার হুমকি দেয়।
তরুণীর মা বলেন, আমরা গরিব আর ওই সন্ত্রাসীরা রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয়ে চলে। আমরা তাদের সঙ্গে কিছুতেই পারবো না। এলাকাবাসী শুনেও ভয়ে কোন প্রতিবাদ করেনি। আমি সন্ত্রাসীদের ফাঁসি চাই। সন্ত্রাসীরা কতটুকু ভয়ঙ্কর তা আমার পরিবারের সকলে ও এলাকাবাসী জানে। বিচার না পেলে গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলায় চলে যাব। ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, অভিযোগ পেয়ে পুলিশের দুটি টিম পাঠানো হয়েছে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।