করোনার প্রভাব থাকা স্বত্ত্বেও এবছর নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় যে ডিংগাপোতা হাওর যেটি নিয়ে শঙ্কা থাকে সেই হাওরের ধান কাটা প্রায় শেষের পথে। কৃষকরা কাটা মাড়াইয়ের সাথে সাথেই হাওর থেকেই বিক্রি করে দিচ্ছেন তাদের ধান। ধানের দাম কম থাকায় হতাশ তারা।
হাওর ঘুরে দেখা যায়, নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম হাওর হচ্ছে মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গাপোতা হাওর। এ হাওরটিতেই শুধু মাত্র ৬ থেকে ৭ হাজার হেক্টর জমি আবাদ হয় প্রতিবছর। সেইসাথে জোয়ারের পানি আসলে আগেই ডুবে যায় হাওরটি। জেলার হাওরাঞ্চলের তিনটি উপজেলার মধ্যে মোহনগঞ্জ উপজেলায় এবার ১৭ হাজার ১০ হেক্টর জমি আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে ডিঙ্গাপোতা হাওরেই ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর।
এবছর করোনার প্রভাবে শ্রমিক সংকট থাকায় প্রথম দিকে কৃষকেরা আতংকে থাকলেও ইতিমধ্যে অধিকাংশ জমির ধান কাটা প্রায় শেষ।
কৃষকরা বলছেন, ধান পেয়ে খুশি তারা। এবছর পানি দেরিতে সরায় আবাদে বিলম্বের জন্য ধান দেরিতে পাকায় প্রথমের দিকে শঙ্কিত ছিলেন তারা। একদিকে করোনায় শ্রমিক সংকট অন্যদিকে দেরিতে ফলন। যে কারেণ কিছু সংখ্যক জমি নিয়ে কিছুটা চিন্তিত থাকলেও আগামী কয়েকটা দিন আবহাওয়া ভালো থাকলে সেটাও তুলতে পারবে।
এদিকে শ্রমিক সংকটের জন্য মেশিনের ব্যবস্থা করায় অনেকটা কাজ এগিয়ে গেছে। তবে ধানের দামটা কম হওয়ায় হতাশ তারা। ধানের দামটা সঠিক হলে কৃষকেরা এবছর ক্ষতি কাটিয়ে লাভবান হবেন বলে জানান।
অন্যদিকে কিছু সংখ্যক জমি বাকি থাকলেও আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে কেটে ফেলা সম্ভব হবে বলে জানান মোহনগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল। তিনি আরো জানান, হাওরটিতে ৬ হাজার ৫০০ হেক্টরের মধ্যে ইতিমধ্যে ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর কর্তন হয়ে গেছে। যেহেতু হাওর আগে ডুবে যায় সেজন্য এবার সরকারের ১৬ টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও বহিরাগত শ্রমিক মিলিয়ে সর্বমোট ৩০০০ শ্রমিক কাজ করছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসলে আগামী দুয়েকদিনে বাকিটা কেটে ফেলা সম্ভব বলে আশা করছি। জেলার হাওরাঞ্চলের তিন উপজেলায় এবার মোট ৪০৮৬৫ হেক্টর জমির মধ্যে মোহনগঞ্জ উপজেলায় ১৭০১০ হেক্টর জমি আবাদ হয়েছে।