আসছে দিন হবে আরও ভয়ঙ্কর

পৃথিবীর প্রাকৃতিক শক্তির ভারসাম্য রক্ষা, আবহাওয়া, জলবায়ু, একই সঙ্গে পৃথিবীর পানিচক্র ও জলবায়ু ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে সূর্য ও পৃথিবীর মিথষ্ক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে বিভিন্ন কারণেই এ ক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সে কারণে বাড়ছে তাপমাত্রা। আর পৃথিবীর এ উষ্ণায়নের কারণে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের হারও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করছে গ্রিনহাউস গ্যাস।

এ মাত্রা অব্যাহত থাকলে আসছে দিন হবে আরও ভয়ঙ্কর। আবহাওয়ার হেঁয়ালিপনার কারণে এখন আর মিলে না ঋতুবৈচিত্র্যের অঙ্ক। মধ্য শীতেও থাকে না শীতের খবর। ভরা বর্ষায় থাকে দাবদাহ। একদিনের ব্যবধানেই ওঠানামা করে কয়েক ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। প্রকৃতির এ চরিত্র নিয়ে প্রচ- চিন্তিত জলবায়ু বিজ্ঞানীরাও। তারা বলছেন, আমাদের অজান্তেই জলবায়ু পরিবর্তনের ঘূর্ণিপাকে হারিয়ে যেতে পারে পৃথিবী!

আবার বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হার নিয়ে কয়েক মাস আগে জাতিসংঘ জলবায়ুবিষয়ক প্যানেল আইপিসিসির ভীতিকর তথ্য দেয়। এতে বলা হয়েছে, ২০৩০ থেকে ২০৫২ সালের মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হার ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করবে। এসব মাথায় রেখে প্রতিবছর ২৩ মার্চ পালন করা হয় বিশ্ব আবহাওয়া দিবস। পৃথিবীর মানুষকে সচেতন করা হয় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে।

বরাবরের মতো বাংলাদেশসহ বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) ১৯৩টি সদস্য দেশ ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলগুলো আজ দিনটি পালন করবে। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়, ‘সূর্য, পৃথিবী ও আবহাওয়া’। এ পরিপ্রেক্ষিতে আবহাওয়া বা জলবায়ুর ওপর সূর্য ও পৃথিবীর যৌথ প্রভাব সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে, এমনটাই মনে করছেন পরিবেশবিদরা। আন্তঃদেশীয় আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং স্থান ও সময়োপযোগী আবহাওয়া ও জলবায়ু সংক্রান্ত তথ্যের আদান-প্রদান ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে ডব্লিউএমও সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশও। এবারও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করবে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ঢাকাস্থ সদর দপ্তরে আয়োজন করা এক অনাড়ম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব) মো. সুবিদ আলী ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আখতার হোসেন ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে আবহাওয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও প্রামাণ্য চিত্র জনসাধারণের জন্য প্রদর্শন করা হবে। ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কদ্বীপ সজ্জিতকরণ ও র‌্যালিরও আয়োজন করা হবে।

এ ছাড়াও ঢাকা, কক্সবাজার, খেপুপাড়া, রংপুর ও মৌলভীবাজারের অপারেশনাল ইউনিট ও রাডার স্টেশনগুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।

এদিকে বিশ্ব আবহাওয়া দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বর্তমানে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী ঝড়, বন্যা, খরা, তাপপ্রবাহ, শৈত্যপ্রবাহ এবং সমুদ্রের উপরিতলের উচ্চতা বুদ্ধির মতো চরম ঘটনাগুলোর সংখ্যা, তীব্রতা ও মাত্রার মধ্যে অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হচ্ছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞানভিত্তিক আবহাওয়া ও জলবায়ুর তথ্য এবং ভবিষ্যৎ দৃশ্য রূপায়ণ, দৈনন্দিন ও ঋতুভিত্তিক পূর্বাভাস, স্বল্পকালীন এবং দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস সময়মতো জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

Scroll to Top