গত বৃহস্পতিবার দুটি জাহাজের সংঘর্ষের পর শুক্রবার থেকে কর্ণফুলী নদীতে ভাসছে তেল। আকস্মিকভাবে ১০ টন জ্বালানি তেল নদীতে পড়ে যাওয়ায় জলজ প্রাণী এবং নদীর পরিবেশ ও প্রতিবেশ মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) জানায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে নদীর পতেঙ্গা এলাকায় ডলফিন অয়েল জেটি থেকে তেল নিয়ে যাওয়ার পথে ট্যাংকার দেশ-১-এর সঙ্গে একটি লাইটার জাহাজের সংঘর্ষ হয়। ওই জাহাজটির নাম সিটি-৩৮। ফলে দেশ-১-এর ৩ নম্বর ট্যাংক ফুটো হয়ে প্রচুর পরিমাণে তেল কর্ণফুলী চ্যানেলে পড়তে থাকে।
জানতে চাইলে বন্দর পর্ষদ সদস্য কমোডর ক্যাপ্টেন শফিউল বারী বলেন, দুর্ঘটনার পর দেশ-১ ট্যাংকার থেকে ১০ টন তেল নদীতে পড়ে। এ সময় দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজ থেকে আরেকটি জাহাজে তেল সরিয়ে নেওয়া হয়।
জানা গেছে, দুর্ঘটনার পর বে-ক্লিনার-১, বে-ক্লিনার-২, স্কিমার-১, স্কিমার-২, কান্ডারি-৮-সহ ৭টি তেল উদ্ধারকারী নৌযান ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এরপরও শুক্রবার সকাল থেকে নদীর বিভিন্ন এলাকায় তেল ভাসতে দেখা যাচ্ছিল। আজ শনিবার দিনভরও বিভিন্ন এলাকায় তেল ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।
আজ সকালে সরেজমিনে নদীর ফিরিঙ্গী বাজার, শাহ আমানত তৃতীয় সেতু এলাকায় দেখা যায় কালো তেল নদীতে ভাসছে। ভাটার সময় আবার নেমে যাচ্ছে। নদীর তীরের দিকে কচুরিপানা এবং বিভিন্ন ভাসমান প্লাস্টিকসামগ্রী কালো আকার ধারণ করেছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজ দুটিকে আটক করে কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়। যাচাই-বাছাই করে এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে দুর্ঘটনার পর আজ দুপুরে পরিবেশ অধিদপ্তর মহানগরের সহকারী পরিচালক সংযুক্তা দাশগুপ্তার নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ সময় তারা নদীতে তেল ভাসতে দেখতে পায়।
জানতে চাইলে সংযুক্তা দাশগুপ্তা বলেন, ‘পরিদর্শন শেষে একটি প্রতিবেদন পরিচালক স্যারকে দেব। এরপর তিনি ব্যবস্থা নেবেন। তেলগুলো জোয়ারের কারণে পাড়ের দিকে চলে এসেছে।’
কর্ণফুলী নদীতে এভাবে তেলের দূষণ নদীর জলজ প্রাণী এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে পরিবেশবাদীরা মনে করছেন।