রাজধানীর গুলশান-১-এর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মার্কেটের পাশের কাঁচাবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। শনিবার ভোর ৫টা ৪৮ মিনিটে লাগা এই আগুন ৮টা ৪৫ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ২০টি ইউনিট। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দেয় সেনা ও নৌবাহিনী। তবে বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মেজর শাকিল নেওয়াজ সাংবাদিকদের আগুন নিয়ন্ত্রণের তথ্য জানান।
আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনা ও নৌ-বাহিনীও কাজ করেছে। আর তাদের সাহায্য করেছেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ।
এদিকে কাঁচা বাজারের সামনে জড়ো হয়েছেন বাজারটির দোকানিরা। তাদের চোখেমুখে সর্বস্বান্ত হওয়ার উদ্বিগ্নতা। মলিন চেহারায় তাকিয়ে আছেন পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর দিকে।
তাদের মধ্যে কাঁচাবাজারের সামনে বসে বিলাপ করতে দেখা যায় সৈয়দা রাবেয়ার সুলতানাকে। ডিএনসিসি কাঁচাবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে তিনিও একজন।
তিনি জানায়, ২০১৭ সালে এই মার্কেটে আগুনে আমার পাঁচটি দোকান পুড়ে যায়। প্রায় ১২ লাখ টাকা ঋণ করে কাঁচাবাজারে আবার পাঁচটি দোকান নেই। আজকের আগুনে সেগুলোও পুড়ে ছাই। আমরা ঋণ করে ব্যবসা করি। কীভাবে টাকা পরিশোধ করবো বুঝতে পারছি না। সব দোকান পুড়ে ছাই।
শনিবার ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে ডিএনসিসির কাঁচাবাজারের আগুন লাগে। আগুনে প্রায় ৩শ দোকান পুড়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল নেওয়াজ জানিয়েছেন, মার্কেটে আগুন নেভানোর কোনও ব্যবস্থা ছিল না। পানির সংকট ছিল। ২০১৭ সালের অগ্নিকাণ্ডের পর যে সুপারিশ করা হয়েছিল, তা মার্কেট কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে অনুসরণ করেনি।
ঘটনাস্থলে এসে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আপনারা জানেন এর আগেও এখানে আগুন লেগেছিল। কেন বারবার এই অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখা হবে। এখন সময় এসেছে স্থায়ী সমাধান করার।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ গুলশান কাঁচাবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, এই মার্কেটটি ভেঙে আন্তর্জাতিক মানের শপিং মল করার কথা ছিল। যেকোনও কারণে এটা হয়নি। কিন্তু এখন জনগণের স্বার্থে যেকোনও মূল্যে এটাকে ভেঙে মার্কেট তৈরি করতে হবে।
উল্লেখ্য, বছর দুয়েক আগে, ২০১৭ সালের ২ জানুয়ারি রাত ২টার দিকে আগুন লাগে ডিসিসি মার্কেটের কাঁচা মার্কেট অংশে। ১৫ মিনিটের মধ্যে কাঁচা মার্কেটটি ধসে পড়ে। পরে আগুন পাকা মার্কেটেও ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট প্রায় ১৬ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বনানীর ২২তলা এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ৭১ জন আহত হয়েছেন। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা ফায়ার সার্ভিসের ২২টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।