রাজধানীর বনানীতে আগুন লাগা বহুতল ভবন এফ আর টাওয়ারের নিজস্ব কোনও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (ডেভেলপমেন্ট এন্ড প্ল্যানিং) সিদ্দিক মো. জুলফিকার আহমেদ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুর্ঘটনাকবলিত ভবনটির সামনে ওই অগ্নিকাণ্ডের উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেওয়া এই ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা সংবাদিকদের একথা জানান।
দুপুর পৌনে ১টার দিকে আগুন লাগার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এফ আর টাওয়ারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে এখন পর্যন্ত ৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
জুলফিকার আহমেদ বলেন, \’২২ তলা এই বিল্ডিংয়ের অগ্নি নির্বাপণের জন্য নিজস্ব ব্যবস্থা ছিল না। ভবনের যতদিন নিজস্ব সক্ষমতা না থাকবে ততদিন এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে। হতাহতের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।
এফ আর টাওয়ারের আগুন নিয়ে তিনি বলেন, আগুন ৯৫ ভাগ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ভেতরে তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকায় কিছু জায়গায় আগুন জ্বলছে। আমাদের ইউনিটগুলো পানি ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা বলেন, \’আমাদের রেসকিউ টিম সার্চ করার জন্য প্রতিটি তলায় যাচ্ছে। ভেতরে কেউ হতাহত থাকলে তাদের উদ্ধার করা যাবে। এ পর্যন্ত ৬৮ জন আহত পেয়েছি। উদ্ধার কাজ শেষে হতাহতের সঠিক সংখ্যা বলা যাবে।\’
তিনি জানান, মৃতদেহ হাসপাতালে শনাক্ত করা হয়েছে। এই সংখ্যা বাড়তে পারে। ভবনে পূর্ণাঙ্গ তল্লাশির জন্য ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার দল প্রবেশ করেছে।
জুলফিকার আহমেদ জানান, পাঁচ থেকে সাত তলা আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আবার নয়-দশতলা থেকে শুরু করে উপরে দিকে তলাগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না।
তিনি বলেন, কী কারণে আগুন লেগেছে, তা এখনি নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। তবে ধারণা করা যাচ্ছে, এ ধরনের ভবনে সাধারণত বৈদ্যুতিক গলযোগ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ভবন তৈরির সময় বিল্ডিং কোড না মেনে তৈরি করা হয়। যে কারণে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আগুন লাগার কারণ, করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ করব। এ ধরনের অবহেলা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সময় এসেছে। আর ছাড় দেয়া যাবে না।
তিনি আরও জানান, উদ্ধারে সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, রেড ক্রিসেন্ট সহ অনেক স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেছে।