১১৬ উপজেলায় আ’লীগের জয়জয়কার

দ্বিতীয় দফায় ১১৬ উপজেলায় ভোট নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে আ’লীগ প্রার্থীদের জয়জয়কার। বেশির ভাগ উপজেলাতেই নৌকা জয়ী হয়। তবে বেশকিছু উপজেলায় আ’লীগের বিদ্রোহীরা জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। সোমবারের উত্তাপহীন এ নির্বাচনে ভোটার না থাকায় কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে। ১৫ জেলার ১১৬টি উপজেলায় সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে বিকাল চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তথ্য বলছে, দ্বিতীয় ধাপের ২৩টি উপজেলায় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন। এর মধ্যে ৬টি উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় সেখানে কোনো ভোট হচ্ছে না। যে ছয়টি উপজেলায় ভোটের দরকার হচ্ছে না, সে উপজেলাগুলো হচ্ছে- নওগাঁ সদর, পাবনা সদর, ফরিদপুর সদর, নোয়াখালীর হাতিয়া এবং চট্টগ্রামের রাউজান ও মীরসরাই।

এর বাইরে আরও ১৭টি উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় চেয়ারম্যান পদে ভোট হচ্ছে না। ওই উপজেলাগুলো হচ্ছে- রংপুরের কাউনিয়া ও গঙ্গাচড়া, দিনাজপুরের হাকিমপুর, পার্বতীপুর ও ঘোড়াঘাট, বগুড়ার আদমদীঘি ও শেরপুর, পাবনার সুজানগর, মৌলভীবাজারের সদর, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, হাটহাজারী, সন্দ্বীপ ও রাঙ্গুনিয়া, রাঙ্গামাটির কাপ্তাই, লংগদু এবং খাগড়াছড়ির সদর ও মানিকছড়ি।

এছাড়া ১৩টি উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও ১২টি উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে এসব পদেও ভোট হচ্ছে না। সব মিলিয়ে ৪৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন। দ্বিতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে মোট প্রার্থী ৩৭৭ জন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৪৮ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪০০ জন প্রতিদ্বন্দ্বি^তা করেছেন। ভোটার ১ কোটি ৭৯ লাখ ৯ হাজার ৬ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৭ হাজার ৩৯টি। নির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট উপজেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী

রংপুর : গঙ্গাচড়ায় আওয়ামী লীগের রুহুল আমিন ও কাউনিয়ায় আওয়ামী লীগের আনোয়ারুল ইসলাম মায়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া তারাগঞ্জে আনিছুর রহমান লিটন (নৌকা), পীরগাছায় শাহ মো. মাহবুবার রহমান (লাঙ্গল), বদরগঞ্জে ফজলে রাব্বী সুইট (নৌকা), পীরগঞ্জে নুর মোহাম্মদ মণ্ডল (নৌকা), জয়ী হয়েছেন।

বগুড়া : আদমদীঘিতে আওয়ামী লীগের সিরাজুল ইসলাম খান রাজু ও শেরপুরে দলটির মজিবুর রহমান মজনু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া বগুড়া সদরে আওয়ামী লীগের আবু সুফিয়ান সফিক, সারিয়াকান্দিতে আওয়ামী লীগের অধ্যক্ষ মুহম্মদ মুনজিল আলী সরকার, নন্দীগ্রামে আওয়ামী লীগের রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ, দুপচাঁচিয়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ফজলুল হক প্রামাণিক, ধুনটে আওয়ামী লীগের আবদুল হাই খোকন, গাবতলীতে আওয়ামী লীগের রফি নেওয়াজ খান রবিন, শাজাহানপুরে আওয়ামী লীগের সোহরাব হোসেন সান্নু, কাহালুতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আল হাসিবুল হাসান, সোনাতলায় আওয়ামী লীগের মিনাহদুজ্জামান লিটন ও শিবগঞ্জে স্বতন্ত্র ফিরোজ আহমেদ রিজু জয়ী।

নওগাঁ : সদরে আওয়ামী লীগের রফিকুল ইসলাম রফিক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া মান্দায় আওয়ামী লীগের স ম জসিম উদ্দিন, বদলগাছীতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী সামসুল আলম খান, মহাদেবপুরে আওয়ামী লীগের আহসান হাবীব, পোরশায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী শাহ মঞ্জুর মোরশেদ, পত্নীতলায় আওয়ামী লীগের আবদুল গাফ্ফার, রানীনগরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আনোয়ার হোসেন হেলাল, আত্রাইয়ে আওয়ামী লীগের এবাদুর রহমান প্রামাণিক, নিয়ামতপুরে আওয়ামী লীগের ফরিদ আহমেদ, সাপাহারে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী শাহজাহান হোসেন, ধামইরহাটে আওয়ামী লীগের আজাহার আলী জয়ী।

ঠাকুরগাঁও : সদরে আওয়ামী লীগের অরুনাংশু দত্ত টিটো, বালিয়াডাঙ্গীতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আলী আসলাম জুয়েল, হরিপুরে আওয়ামী লীগের জিয়াউল হাসান মুকুল, পীরগঞ্জে আওয়ামী লীগের আখতারুল ইসলাম, রানীশংকৈলে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহরিয়ার আজম মুন্না জয়ী।

সিলেট : সদরে আওয়ামী লীগের আশফাক আহমদ (নৌকা), দক্ষিণ সুরমায় আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আবু জাহিদ, ফেঞ্চুগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মো. নূরুল ইসলাম, বালাগঞ্জে আওয়ামী লীগের মোস্তাকুর রহমান, বিশ্বনাথে আওয়ামী লীগের মো. নুনু মিয়া, কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী শামীম আহমদ শামীম, জৈন্তাপুরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামাল আহমদ, গোয়াইনঘাটে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মোহাম্মদ ফারুক আহমদ, জকিগঞ্জে আওয়ামী লীগের মো. লোকমান উদ্দিন চৌধুরী, কানাইঘাটে আওয়ামী লীগের আবদুল মোমিন চৌধুরী, গোলাপগঞ্জে আওয়ামী লীগের ইকবাল আহমদ চৌধুরী (নৌকা), বিয়ানীবাজারে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল কাশেম পল্লব জয়ী।

দিনাজপুর : হাকিমপুরে হারুন-উর রশিদ, ঘোড়াঘাটে রাফে খন্দকার শাহান শাহ ও পার্বতীপুরে হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তারা তিনজনই আওয়ামী লীগের। এছাড়া বিরলে আওয়ামী লীগের একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, বোঁচাগঞ্জে জাতীয় পার্টির মো. জুলফিকার হোসেন, বিরামপুরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী খায়রুল আলম, ফুলবাড়ীতে আওয়ামী লীগের আতাউর রহমান মিল্টন (নৌকা), খানসামায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আবু হাতেম, চিরিরবন্দরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী তারিকুল ইসলাম তারিক (আনারস), কাহারোলে স্বতন্ত্র আবদুল মালেক সরকার, নবাবগঞ্জে আওয়ামী লীগের মো. আতাউর রহমান (নৌকা) ও বীরগঞ্জে আওয়ামী লীগের আমিনুল ইসলাম (নৌকা) জয়ী হয়েছেন।

গাইবান্ধা : সদরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহ সারোয়ার কবীর, সাদুল্যাপুরে আওয়ামী লীগের সাহারিয়া খান, পলাশবাড়িতে আওয়ামী লীগের একেএম মোকছেদ চৌধুরী, ফুলছড়িতে আওয়ামী লীগের জিএম সেলিম পারভেজ, সাঘাটায় আ’লীগের বিদ্রোহী জাহাঙ্গীর কবীর জয়ী হয়েছেন।

পাবনা : সদরে আওয়ামী লীগের মোশারোফ হোসেন ও সুজানগরে আ’লীগের শাহিনুজ্জামান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। এছাড়া চাটমোহরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আবদুল হামিদ মাস্টার, ভাঙ্গুড়ায় আওয়ামী লীগের মো. বাকি বিল্লাহ, বেড়ায় আওয়ামী লীগের আবদুল কাদের, সাঁথিয়ায় আওয়ামী লীগের আবদুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ার, ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগের নুরুজ্জামান বিশ্বাস, আটঘরিয়ায় আ’লীগের বিদ্রোহী তানভির ইসলাম, ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী গোলাপ হোসেন গোলাপ জয়ী হয়েছেন।

মৌলভীবাজার : সদরে আওয়ামী লীগের মো. কামাল হোসেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। কমলগঞ্জে অধ্যাপক রফিকুর রহমান (আ’লীগ বিদ্রোহী), রাজনগরে শাহজাহান খান (আ’লীগ বিদ্রোহী), কুলাউড়ায় আ’লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী একেএম শফি আহমদ সলমান (আনারস), জুড়ীতে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী এমএ মোঈদ ফারুক (আনারস), শ্রীমঙ্গল-রণধীর কুমার দেব (আ’লীগ বিদ্রোহী), বড়লেখায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী সোয়েব আহমদ জয়ী হয়েছেন।

ফরিদপুর : সদরে আওয়ামী লীগের আবদুর রাজ্জাক মাস্টার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বোয়ালমারীতে আওয়ামী লীগ মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া, মধুখালীতে আওয়ামী লীগের মির্জা মনিরুজ্জামান বাচ্চু, আলফাডাঙ্গায় আ’লীগের বিদ্রোহী একেএম জাহিদুল হাসান, নগরকান্দায় আওয়ামী লীগের মনিরুজ্জামান সরদার, সালথায় আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী ওয়াদুদ মাতুব্বর, চরভদ্রাসনে স্বতন্ত্র মোশারফ হোসেন ওরফে ভিপি মুশা (আ’লীগ সমর্থক), সদরপুরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাজী শফিকুর রহমান, ভাঙ্গায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এসএম হাবিবুর রহমান জয়ী হয়েছেন।

নোয়াখালী : হাতিয়ায় আওয়ামী লীগের মাহবুব মোর্শেদ লিটন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

চট্টগ্রাম : হাটহাজারীতে আওয়ামী লীগের এসএম রাশেদুল, রাউজানে আওয়ামী লীগের একেএম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, রাঙ্গুনিয়ায় আওয়ামী লীগ খলিলুর রহমান চৌধুরী, সীতাকুণ্ডে আ’লীগের এসএম আল মামুন, মীরসরাইয়ে আওয়ামী লীগের জসিম উদ্দিন, সন্দ্বীপে আওয়ামী লীগের মো. শাহজাহান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এইচএম আবু তৈয়ব (আনারস) নির্বাচিত হয়েছেন।

খাগড়াছড়ি : মানিকছড়িতে আওয়ামী লীগের মো. জয়নাল আবেদীন, সদরে আওয়ামী লীগের মো. শানে আলম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া দীঘিনালায় মো. কাশেম (নৌকা), মাটিরাঙ্গায় আ’লীগের মো. রফিকুল ইসলাম, রামগড়ে আওয়ামী লীগের বিশ্ব প্রদীপ ত্রিপুরা, লক্ষ্মীছড়িতে আওয়ামী লীগের বাবুল চৌধুরী, মহালছড়িতে বিমল কান্তি চাকমা (স্বতন্ত্র) জয়ী হয়েছেন।

রাঙ্গামাটি : লংগদুতে আওয়ামী লীগের আবদুল বাকের সরকার ও কাপ্তাইয়ে আওয়ামী লীগের মো. মফিজুল হক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সদরে মো. শহীদুজ্জামান মহসীন রোমান (আ’লীগ), জুরাছড়িতে স্বতন্ত্র প্রার্থী সুরেশ কুমার চাকমা, কাউখালীতে আওয়ামী লীগের শামসুদ্দোহা চৌধুরী, বিলাইছড়িতে জেএসএস মনোনীত বীরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা, বরকলে জেএসএসের বিধান চাকমা জয়ী হয়েছেন।

বান্দরবান : সদরে আওয়ামী লীগের একেএম জাহাঙ্গীর (নৌকা), নাইক্ষ্যংছড়িতে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ শফিউল্লাহ (নৌকা), রুমায় আওয়ামী লীগের উহ্লাচিং মারমা (নৌকা) এবং জেএসএসের অংথোয়াইচিং মারমা (আনারস), লামায় আওয়ামী লীগের মোস্তাফা জামাল (নৗকা), রোয়াংছড়িতে আওয়ামী লীগের চহাইমং মারমা (নৌকা), থানচিতে আওয়ামী লীগের থোয়াইহ্লামং মারমা (নৌকা), আলীকদমে বিএনপির বহিষ্কৃৃত প্রার্থী মো. আবুল কালাম (দোয়াত কলম) জয়ী হয়েছেন।

কক্সবাজার : চকরিয়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ফজলুল করিম সাঈদী (আনারস) জয়ী হয়েছেন।

Scroll to Top