গুরুত্বপূর্ণ একটি সভায় মন্ত্রীকে খাটো করে বক্তব্য রেখেছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ। তার এ ধরনের বক্তব্যে সভায় উপস্থিত অতিথিদের অনেকেই বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রোববার (১০ মার্চ) নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা ছিল। এ সভায় এসপি হারুন বলেছেন, মন্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে তিনি চাঁদাবাজি রোধ করেছেন। এ নিয়ে সভায় উপস্থিত থাকা অনেকে বলছেন, চাঁদাবাজি রোধ করবেন ঠিক আছে, কিন্তু মন্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে কেনো। আর মন্ত্রীকে হেয় করে প্রকাশ্যে বক্তব্য দেওয়া অনভিপ্রেত। মন্ত্রীর সঙ্গে এটা করাতো তার এখতিয়ারে পড়ে না। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে পারেন না। এটা একেবারেই ঠিক হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এসপি হারুন তার বক্তব্যে হঠাৎ করে বলেন, তিনি মন্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করেছেন। এটা কী করে হয়, একজন সরকারি কর্মকর্তার মাধ্যমে। একইসঙ্গে তিনি প্রকাশ্যে এটা বলতে পারেন না। মন্ত্রীকে এখানে হেয় করা হয়েছে।
সভায় এসপি হারুন বলেছিলেন, নৌপথে দৈনিক লাখ লাখ টাকা চাঁদা তোলা হচ্ছে। এই চাঁদাবাজি রোধ করার জন্য এক মন্ত্রীর সঙ্গে আমার ঝগড়া করতে হয়েছে। চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছিল। এ বিষয়ে নৌপরিবহনমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা হয়েছে। অবশেষে আমরা সেই চাঁদাবাজি বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি আরও বলেছিলেন, এই জেলার সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মাদক। বন্দর, ফতুল্লা, রূপগঞ্জ সব স্থানে মাদক বিক্রি হচ্ছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে মাদক বিক্রি চালিয়ে যাবেন, তা হতে দেবো না।
অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন এসপি হারুন। সেখানে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন ঘিরে কাউকে কোনো প্রকারের অরাজকতা করতে দেওয়া হবে না। এই নির্বাচনকে ঘিরে কেউ সংসদ নির্বাচন করে যাবেন, সেটা হবে না। এই কথা ভুলে যান।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের সময় মন্ত্রী-এমপিরা নিজ এলাকায় অবস্থান করবেন কি-না, সেটিও তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।
রোববার দুপুরে জেলা সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ সভার সভাপতি ছিলেন জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া। এসময় পুলিশ সুপার ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জসিম উদ্দন হায়দার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মনিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বেলা রাণী সিংহ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা পিপি, জেলার বিভিন্ন সরকারি দফতরের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।