বন্ধ হচ্ছে গাড়িতে সিলিন্ডার গ্যাস

চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় গাড়িতে সিলিন্ডারে করে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের চিন্তা করছে সরকার। এ ক্ষেত্রে বিকল্প সন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একজন সচিবকে।

শুক্রবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চকবাজার আগুনে দগ্ধদের দেখে এসে সাংবাদিকদের এ কথা জানান সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

চকবাজার আগুনের প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করেছেন যে, এই আগুনের সূত্রপাত হয় একটি গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে। পরে ওই গাড়ির সঙ্গে সংঘর্থ বাঁধা পিকআপ ভ্যানে থাকা গ্যাসের আরো বেশ কয়েকটি সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। পরে স্থানীয় একটি খাবার হোটেলের রান্নার জন্য রাখা বেশ কয়েকটি বড় সিলিন্ডারেও বিস্ফোরণ ঘটায়।

এক পর্যায়ে আগুন ছড়ায় ওয়াহেদ ম্যানসন নামে একটি ভবনে। সেখানে বেশ কিছু দাহ্য পদার্থের মজুদ ছিল। আর এ কারণে এই আগুন ছড়িয়ে যায় এই ভবন এবং আশেপাশের আরো কয়েকটি ভবনে।

এই দুর্ঘটনার পর গাড়ির সিলিন্ডারের বিপদের বিষয়টি সামনে এসেছে। নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ বছর পর পর এসব সিলিন্ডার পুনঃপরীক্ষা করার কথা থাকলেও তা করেন না গাড়ির মালিকরা। এক হিসাবে জানা গেছে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি দেয়াদউত্তীর্ণ সিলিন্ডার বসানো আছে গাড়িতে।

২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর গাড়িতে সিলিন্ডারে করে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। এতে সে সময়ের টু স্ট্রোক ইঞ্জিন থেকে ছড়ানো দূষণ অনেকটাই কমে আসে। পাশাপাশি সাশ্রয়ী জ্বালানিতে চলাচলের সুবিধা থাকায় প্রাইভেট কারের সংখ্যাও বাড়ে। তবে সিলিন্ডার পুনঃপরীক্ষা নিয়ে অনীহার কারণে এই বিষয়টি এখন বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি গ্যাস সংকটেও এটি ভূমিকা রাখছে।

সড়ক মন্ত্রী জানান, গণপরিবহনে ব্যবহৃত মেয়াদউত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার পরিক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে দ্রুত অপসারণে বিআরটিএকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পুরান ঢাকার চকবাজারে আগুনের ঘটনা ভয়াবহ ও মর্মান্তিক উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা ইতিমধ্যে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছি- অবৈধ কেমিক্যাল গুদাম এবং রাসায়নিক বিক্রি করে এমন দোকান চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় আনার।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা রাসায়নিক গুদাম বন্ধে বা সরানোর দায়িত্বে ছিলেন, নিশ্চিত তাদের অবহেলা ছিল। আমি মনে করি, তাদেরও জবাবদিহির প্রয়োজন আছে।

পুরান ঢাকায় রাসায়নিক গুদাম বন্ধে সরকার কঠোর হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, এসব ঘটনা শুধু আইন দিয়ে বন্ধ করা যাবে না। একই সঙ্গে সচেতন মহল ও এলাকাবাসীকেও এমন অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, চকবাজারে আগুনে দগ্ধদের সব দায়িত্ব নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত তাদের খোঁজখবর রাখছেন।

এদিন ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী সেলিম সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে আগুনে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে দেন।

Scroll to Top