জাতীয় সংসদের প্রথম বাঙালি খ্রিষ্টান নারী এমপি গ্লোরিয়া ঝর্ণা

দেশে প্রথমবারের মতো সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য খ্রিস্টান কোনো নারী। তিনি হচ্ছেন খুলনার দাকোপ উপজেলার লাউডোব গ্রামের মেয়ে অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার। একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছিলেন তিনি।

ঝর্ণা সরকার আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক উপকমিটির সদস্য। তিনি খুলনার রাজনীতিতে নবাগত। তাই তাকে ঘিরে খুলনা-বাগেরহাটবাসীর কৌতূহলের যেন শেষ নেই।

সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া আওয়ামী লীগের তালিকায় র্ঝণা সরকারের নাম ছিল ৩০ নম্বরে। তিনি খুলনা-বাগেরহাট ১১নং সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য হিসেবে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন।

১৯৭৯ সালে দাকোপের লাউডোব গ্রামের বাসিন্দা সুশান্ত সরকার ওরফে শানু শিকারী ও সুপ্রিয়া রেনু শিকারীর খ্রিস্টান পরিবারে জম্মগ্রহণ করেন ঝর্ণা। স্কুল জীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে নাম লেখান। তার ঠাকুর মা নিলিমা শিকারী মুক্তিযুদ্ধের সময় দাকোপ উপজেলার লাউডোব ও বানিশান্তা ইউনিয়নে নিজস্ব ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেছেন।

১৯৯৫ সালে সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। মাধ্যমিক শিক্ষা জীবনে মা-বাবার সঙ্গে একটি হত্যা মামলায় আসামি হয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন; সেই থেকে তার স্বপ্ন ছিল আইনজ্ঞ হওয়ার।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যশোরের সরকারি মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদিকার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ সালে যশোরে এইচএসসি পাস করেন। ২০০০ সালে তেজগাঁও সরকারি কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন। এরপর ২০০৩ সালে আইন বিভাগে উত্তীর্ণ হন।

পড়ালেখার পাশাপাশি রাজনীতি করতেন। ২০০৪ সালে আইন বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা আইনজীবী পরিষদে শিক্ষানবিশ ছিলেন। তখন আওয়ামী লীগ আইনজীবী পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট শাহানাজ পারভীনের সাথে একুশে আগস্টের সেই সমাবেশে যোগদান করেন। সেই গ্রেনেড হামলায় মারাত্মক আহত হন।

তারপর কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার। রাজনীতি ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ খ্রিস্টান যুব উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির মহিলা বিষয়ক সহ-সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।

অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার বলেন, খুলনা-বাগেরহাটের সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। যুব প্রজন্মের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করব। তাছাড়া নেত্রী যে দায়িত্ব দেবেন জীবনের বিনিময়ে হলেও তা পালন করব। এখনো ২১ আগস্টের ক্ষত বহন করে চলেছি। দু’পা, দু’কান ও মাথায় এখনো সমস্যা রয়ে গেছে।আমি নেত্রীর হয়ে সাধারণ মানুষের পাশে যেতে চাই। তাদের দুখে-দুঃখে পাশে থাকতে চাই।

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিএস  

Scroll to Top