ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬টি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হলেও তার নিজের কিংবা স্ত্রী সন্তাদের কোনো গাড়ি নেই। এ ছাড়া হাতে নগদ মাত্র ৮৭ হাজার ৬৩ টাকা রয়েছে। ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে গড়ে মাসিক আয় ২৬ হাজার ৭৭০ টাকা। ডিএনসিসি নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া হলফনামায় তিনি এমন তথ্য উল্লেখ করেছেন।
বাৎসরিক আয়
আতিকুল ইসলাম তার ১৬টি প্রতিষ্ঠান থেকে আয় দেখিয়েছেন ৫১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। কৃষিতে ৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, বাড়ি ভাড়া থেকে ৩৬ লাখ ৫০ ৪০৪ টাকা, ব্যাংক সুদ থেকে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭১ টাকা ও মৎস্য খাত থেকে ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় দেখিয়েছেন। আর স্ত্রীর আয় দেখিয়েছেন ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
অস্থাবর সম্পদ
ব্যবসায়ী এই নেতা হলনামায় তার হাতে নগদ অর্থ উল্লেখ করেছেন ৮৭ হাজার ৬৩ টাকা। তবে স্ত্রীর হাতে আছে ২ কোটি ৫৯ লাখ ২৯ হাজার ৭৬৫ টাকা, যার মধ্যে পুঁজি হচ্ছে ২ কোটি টাকা। আতিকুল ইসলামের হাতে বৈদেশিক মুদ্রা আছে ১ হাজার ৫৭৬ দশমিক ১৩ মার্কিন ডলার।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে ১ কোটি ১০ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬০ টাকা, স্ত্রীর নামে ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৫ টাকা আর কন্যার নামে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৯৩৪ টাকা রয়েছে।
বন্ড, স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির ৩ কোটি ৭৫ লাখ ২৪ হাজার টাকার শেয়ার রয়েছে।
২ লাখ টাকার অলংকার নিজের এবং ৩০ ভরি সোনা আছে স্ত্রীর। নিজের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আছে ৫ লাখ টাকার, আর স্ত্রী আছে ৩ লাখ টাকার। নিজের আসবাব আছে ৫ লাখ টাকার, স্ত্রীর আছে ২ লাখ টাকার।
হলফনামায় অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে বাস, ট্রাক, মোটরগাড়ি, লঞ্চ, স্টিমার, বিমান ও মোটরসাইকেল ইত্যাদি বিবরণের ঘরটি তিনি ফাঁকা রেখেছেন। অর্থাৎ আতিকুল ইসলামের নিজের বা তার স্ত্রীর বা তার কন্যার কোনো গাড়ি নেই।
স্থাবর সম্পত্তি
আতিকুল ইসলামের নিজের নামে এক একর ৭৪ দশমিক ০৩৫ শতাংশ কৃষি জমি আর স্ত্রীর নামে রয়েছে ৪৫ শতাংশ কৃষি জমি। নিজের নামে অকৃষি জমি আছে ৩৫ দশমিক ১৭ শতাংশ।
নিজের নামে ২ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার বাড়ি আছে। আর স্ত্রীর নামে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ৫০ লাখ টাকায় বায়না করা আছে।
বেসরকারি একটি ব্যাংকে গৃহ ঋণ আছে ১ কোটি ১০ লাখ ৭৫ হাজার ৩৭১ দশমিক ১৬ টাকার। এছাড়াও একই ব্যাংকের প্রিন্সিপাল ব্রাঞ্চ ও গুলশান ব্রাঞ্চ, ইস্টার্ন ব্যাংকের প্রিন্সিপাল ব্রাঞ্চ ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের গুলশান ব্রাঞ্চে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর বা ডাইরেক্টর হওয়ার সুবাধে ঋণ নিয়েছেন এবং এগুলো নিয়মিত রয়েছে।
আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির ডিএনসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে ছয় প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদের মনোনয়নপত্রটি বাতিল করেছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এ ছাড়া নির্বাচনে আরেক প্রার্থী কোটিপতি ব্যবসায়ী ববি হাজ্জাজের নিজের কোনো বাড়ি নেই। তার মাসিক আয় ২৮ হাজার ২৮৪ টাকা। এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রহিমের নামে রয়েছে ৮টি মামলা। শেয়ার, বন্ড ও সঞ্চয়পত্রে তার সম্পদের পরিমাণ রয়েছে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
অন্যদিকে পিডিপির মেয়র প্রার্থী শাহীন খানের কোনো আয়ের উৎস নেই। আর এনপিপির মেয়র প্রার্থী আনিসুর রহমান দেওয়ানের মাসিক আয় ২০ হাজার টাকা। অন্যদিকে মনোনয়ন বাতিল হওয়া গায়ক শাফিন আহমেদের মাসিক আয় ৬৬ হাজার ৬৬৬ টাকা। তার অন্য কোনো সম্পদ নেই।
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএস