বিরল রোগে আক্রান্ত আবুল বাজনদারকে আবারও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা নতুন করে তার অস্ত্রোপচারের জন্য কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আবুল তা করছেন না। কারণ তিনি বিদেশে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চান।
ঢামেক সূত্রে জানা যায়, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার আবুল বাজনদার বিরল রোগ নিয়ে ২০১৬ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসকরা তখন জানান, হাতে-পায়ে শিকড়ের মতো মাংস গজানো এ রোগটি ‘এপিডার্মোডিসপ্লাসিয়া ভেরাসিফরমিস’। এটি ‘ট্রি-ম্যান’ (বৃক্ষমানব) সিনড্রম নামে পরিচিত। এর পর তার চিকিৎসার সব খরচ রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দেন। হাসপাতালে ভর্তির পর তার হাতে-পায়ে ছোটবড় ২৫টি অস্ত্রোপচার হয়। তবে দীর্ঘমেয়াদি এ চিকিৎসার মাঝপথেই বাড়ি চলে যান আবুল।
হাতে-পায়ে নতুন করে শিকড়ের মতো মাংস গজানোয় আবুল বাজনদার গত ২০ জানুয়ারি আবারও ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হন। তার চিকিৎসায় ২২ জানুয়ারি নয় সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। ওই বোর্ড তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে আবারও অপারেশন করার পরামর্শ দেয়। সেই সঙ্গে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ব্যবস্থাপত্রও দেওয়া হয়। কিন্তু আবুল চিকিৎসকের দেওয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেননি। এ দেশে অস্ত্রোপচার করাতেও আগ্রহী নন। চিকিৎসার জন্য তিনি বিদেশে যেতে চান।
এ বিষয়ে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সাবেক পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘আবুল বাজনদার আমাদের এখানে ভর্তি হয়েছেন। তার চিকিৎসায় বার্ন ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালামের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তাকে দেখার পর অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। তবে তার আগে এক্সরে, রক্ত পরীক্ষাসহ বেশ কিছু টেস্ট করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু তিনি এসব করছেন না। করবেন না বলেও জানিয়েছেন। তাই আমরা আরও দুই থেকে তিন দিন অপেক্ষা করব। এর মধ্যেও যদি অপারেশন করতে না চান তা হলে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে দেব।’
আবুল বাজনদার বলেন, ‘আমার এ পর্যন্ত ২৫টি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর আবার সেখানে আগের মতো হাতে-পায়ে শিকড় গজাচ্ছে। চিকিৎসকরা এবারও অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন। এ জন্য আমাকে কিছু টেস্ট করতে বলেছেন, কিন্তু আমি এসব করাইনি। চিকিৎসকদের বলেছি, আমি এ রোগের চিকিৎসা দেশের বাইরে গিয়ে নিতে চাই। ওনারা যেন প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় আমাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। তবে বিদেশে পাঠানো না হলে চিকিৎসার বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেব।’