‘জঙ্গিনেতা’ মেহেদী হাসানের সঙ্গে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিদেশি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। পাশাপাশি তিনি নব্য জেএমবি শীর্ষ পর্যায়ের নেতা হওয়ার চেষ্টাও করছিল বলে তার নিকট উদ্ধার করা একটি ল্যাপটপ থেকে র্যাব এসব তথ্য পেয়েছে।
মেহেদীকে রিমান্ডে নেওয়ার পর এ তথ্য জানায় র্যাব। গত ২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর মুখ্য আদালতের বিচারক মেহেদী হাসানকে চার দিন রিমান্ডের অনুমতি দিয়েছিলেন।
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে র্যাব-৩ এর পরিচালক লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ জানান, সে কৌশলে নব্য জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছিল। যাতে সহজে কেউ তার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বুঝতে না পারে এ জন্য সে র্যাম্প মডেলিংয়ের আড়ালে জঙ্গি কার্যক্রম চালাত। তার সঙ্গে বিদেশি মৌলবাদী গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। বিশেষ করে নাশকতার পরিকল্পনা করে সে বিদেশি টাকায় বোমা তৈরির প্রস্তুতি নিয়েছিল।
অপরদিকে, মেহেদী র্যাবের হাতের ধরার পড়ার পর তার কাছ থেকে তৌহিদ, সাজিদ, কামাল ও অপুসহ আরো অন্তত ২০ জন নব্য জেএমবি সদস্যের নাম জানতে পেরেছে র্যাব। র্যাব তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে বলেও জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, র্যাম্প মডেল ছিলেন মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিবরিল। মডেলিংয়ের জগতে তাকে সবাই মেহেদী নামেই চিনত। বেশ কয়েকটি প্রতিযোগিতায়ও অংশগ্রহণ করেন তিনি। তবে ২০১৫ সালের দিকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন মেহেদী। আর এরপরই তার জীবন পাল্টে যেতে থাকে। র্যাম্প মডেল থেকে জেএমবির ‘ব্রিগেড আদ-দার-ই কুতনি’র কমান্ডার হয়ে উঠেন তিনি।
২০ সেপ্টেম্বর বুধবার র্যাব-৩ (র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন) খিলগাঁওয়ের দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় জেএমবি’র সারোয়ার-তামিম গ্রুপের ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনী’র মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিবরিলকে গ্রেফতার করে। তিনি ‘আবু জিবরিল’ নামে জঙ্গি সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।
মেহেদী রাজধানীর দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করেন। মেহেদী র্যাম্প মডেলিং করতেন পাশাপাশি হোম ডেকোরের ব্যবসা করতেন। তিনি তথ্যপ্রযুক্তিতে খুবই দক্ষ একজন ব্যক্তি। এছাড়াও তিনি একজন অনুপ্রেরণামূলক বক্তা। অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দিয়ে তিনি অন্যদের জঙ্গিবাদে জড়াতেন বলেও র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিকে