প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন থেরেসা মে, এরদোয়ান

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সংস্থাটির ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্তরাজ্য ও নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী, তুরস্ক ও এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট, নেদারল্যান্ডসের রানি ও আরওএম এর মহাপরিচালকের সাক্ষাৎ হয়েছে। বুধবার ও আগের দিন মঙ্গলবার বিভিন্ন সময় আলাদা আলাদাভাবে এসব সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার রাতে হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতে পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুরে জাতিসংঘ মহাসচিবের দেওয়া মধ্যাহ্নভোজের পর নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইরনা সোলবার্গ (Erna Solberg) ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

পররাষ্ট্রসচিব জানান, সাক্ষাতে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি মিয়ানমারের নির্যাতনের শিকার সে দেশের নাগরিক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়টিও বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে উঠে আসে। মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে সহায়তা দেওয়ার আগ্রহও প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী ইরনা সোলবার্গ।

মঙ্গলবার বিকেলে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) কন্ট্যাক্ট গ্রুপের এক সভা শেষে একটি অনির্ধারিত বৈঠকে মিলিত হন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান। মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও প্রশংসা করেন এরদোয়ান। তিনি বলেন, তুর্কি জনগণ বাংলাদেশের দুঃখ-কষ্টে সব সময় পাশে থাকবে।

রোহিঙ্গাদের সহায়তার বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেন এরদোয়ান।
আগের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের নিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বুধবার সকালে এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট কারস্তি কালিউলাইদ (Kersti Kaljulaid) ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে দুই দেশের ডিজিটালাইজেশনের বিষয়ে আলোচনা হয়। এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতায় একমত হন দুই নেতা।

বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমা জোররেগিয়েটা সেরুটির (Máxima Zorreguieta Cerruti) মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উন্নয়ন বিষয়ক বিভিন্ন আলোচনার পাশাপাশি রোহিঙ্গা ইস্যুও উঠে আসে। এ ইস্যুতে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন রানি মাক্সিমা। পররাষ্ট্রসচিব জানান, সেখানে প্রধানমন্ত্রী তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ও উপস্থিত ছিলেন। জয়ের সঙ্গে ম্যাক্সিমার তথ্য প্রযুক্তিগত সহায়তার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।

রাতে হোটেল গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশনের (আইওএম) মহাপরিচালক উইলিয়াম ল্যাসি সুইং (William Lacy Swing) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পররাষ্ট্রসচিব বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আইওএম বাংলাদেশে কি কাজ করছে সেটা প্রধানমন্ত্রীকে জানান মহাপরিচালক। আরো কি করবেন সেটাও প্রধানমন্ত্রীকে বলেন তিনি। আগামী ৫-৬ অক্টোবরের দিকে রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখতে উইলিয়াম ল্যাসি সুইং বাংলাদেশে সফরে যাবেন। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়ায় ধন্যবাদ জানান তিনি। রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে মিয়ানমারের ওপর আর্ন্তজাতিক চাপ সৃষ্টির তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতেই হবে।

বাংলাদেশ সময় : ১৬১০ ঘণ্টা, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এ

Scroll to Top