প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি ভাল থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক কম রাখা সম্ভব হয়। তিনি বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণেই বাংলাদেশ একটি দুর্যোগ প্রবণ দেশ। আমাদের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গেই বসবাস করতে হবে। কাজেই সঠিক পরিকল্পনা থাকলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সীমিত রাখা সম্ভব। তিনি আজ তাঁর কার্যালয়ে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের সভায় প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন।মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সচিববৃন্দ, তিনবাহিনী প্রধানগণ এবং সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোন ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় তাঁর সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে। যখনই কোন দুর্যোগের খবর পাওয়া গেছে তখনই তারা সেখানে ছুটে গেছেন এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি রোধে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ’৯১’র ঘুর্ণিঝড়ের উল্লেখ করে বলেন, বিএনপি সে সময় দুর্যোগের খবর পর্যন্ত রাখার প্রয়োজন মনে করেনি। এ বারের বন্যায় সরকারের দুর্যোগকালীন প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের পূর্ব প্রস্তুতি ছিল বলেই কেউ না খেয়ে মরেনি। সরকারের সকল দপ্তরের পাশাপাশি তাঁর দলের নেতা-কর্মীরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে বলেই দুর্গত মানুষের কাছে খাদ্য, প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং ত্রাণসামগ্রী যথাসময়ে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন তাঁর সরকার প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত রেখে জনগণের ভোগান্তি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সম্ভাব্য সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সরকার খাদ্য আমদানি করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। দেশের পার্বত্য অঞ্চলে অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড়ধসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী, দমকলবাহিনী, পুলিশ এবং অন্যান্য সংস্থা সেখান থেকে দুর্গত জনগণকে উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে। বন্যার পানি নেমে যাবার সঙ্গে সঙ্গে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সদস্য এবং তাঁর দলের নেতা-কর্মীরা দিনরাত মাঠে রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে এ সময় সকলকে একযোগে কাজ করে যাবারও আহবান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বন্যা ঘর-বাড়ি ও ফসলের ক্ষতি কওে কৃষকের জন্য দুর্ভোগ বয়ে আনলেও এটি সঙ্গে করে অনেক পলি মাটিও বয়ে আনে যা জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে। উপকূলীয় চলোচ্ছাসও বন্যা প্রতিরোধে বঙ্গবন্ধুর মুজিব কেল্লা তৈরির কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু এক হাজার সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। যার ধারবাহিকতায় বর্তমান সরকার বন্যাও জলোচ্ছাস প্রতিরোধে বহুমুখী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে চলেছে।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার ১৯৯৮ সালে এক দীর্ঘমেয়াদী বন্যা প্রতিরোধে সক্ষম হয়েছিল। যেখানে দেশের ৭০ শতাংশ ভূখন্ড পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল এবং অন্তত ২ কোটি মানুষ মারা যাবার আশংকা করা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তা অত্যন্ত সফলভাবেই মোবাবেলা করতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশ এখন যে কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার সক্ষমতা অর্জন করেছে। জাতির পিতা বন্যা মোবাবেলায় ৪৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন আর এই সরকার ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক গড়ে তুলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসপি