কবর থেকে রূপার মরদেহ উত্তোলন

টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর হত্যার শিকার রুপা খাতুনের (২৭) মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। নিহতের ছয়দিন পর বৃহস্পতিবার বিকেলে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন- টাঙ্গাইলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রহিম সুজন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক কায়ুম খান সিদ্দিকী, নিহতের বড়ভাই ও মামলার বাদী হাফিজুর রহমান।

রুপার ভাই হাফিজুর রহমান জানান, মরদেহ উত্তোলনের পর তাদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তারা মরদেহ বুঝে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে তাড়াশের পথে রওনা করেছেন। রূপার লাশ সরাসরি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় তার গ্রামের বাড়ি আসানবাড়ীতে নিয়ে তার বাবার কবরস্থানের পাশে কবর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

গত শুক্রবার রাতে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে চলন্ত বাসে রূপাকে ধর্ষণের পর ঘাড় মটকে হত্যা করে পরিবহনশ্রমিকেরা। পরে তার লাশ টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রাখা হয়।
রাতে মধুপুর থানার পুলিশ রুপার লাশ উদ্ধার করে। এরপর শনিবার টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রূপার লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ওই দিনই টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে তাকে দাফন করা হয়। গত সোমবার রূপার বড় ভাই হাফিজুল একটি পত্রিকায় বেওয়ারিশ লাশ দাফনের সংবাদ দেখে মধুপুর থানায় এসে বোনের লাশ শনাক্ত করেন।

টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থান থেকে রূপার লাশ তুলে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার।

মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম বলেন, রূপার লাশ উত্তোলন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য রূপার বড় ভাই হাফিজুল ইসলাম প্রামানিক গত বুধবার আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া লাশ উত্তোলন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের আদেশ দেন।

তিনি জানান, ওই আদেশের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যজিস্ট্রেট খান মোঃ নুরুল আমিন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের দায়িত্ব দেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুর রহিম সুজনের উপস্থিতিতে বেলা তিনটা ৪০মিনিটে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) কাইয়ুম খান চৌধুরী জানান, গত শুক্রবার রাতে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে ছোঁয়া পরিবহনের একটি চলন্ত বাসে রূপাকে ধর্ষণের পর ঘাড় মটকে হত্যা করে ওই বাসের শ্রমিকরা। পরে তার লাশ টাঙ্গাইলের মধুপুর বনের ২৫ মাইল এলাকায় ফেলে রেখে যায়। রাতে মধুপুর থানার টহল পুলিশ রুপার লাশ উদ্ধার করে।

এদিকে এ ঘটনায় ওই বাসের চালক হাবিবুর রহমান, সুপারভাইজার সফর আলী, বাসের তিন হেলপার শামীম, জাহাঙ্গীর ও আকরামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, ৩১ আগস্ট ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি

Scroll to Top