আব্দুল জব্বারের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের শোক

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী, ষাট ও সত্তর দশকের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী, একুশে ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য কন্ঠশিল্পী আবদুল জব্বারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

৩০ আগস্ট বুধবার পৃথক শোক বার্তায় মহান মুক্তিযুদ্ধে আবদুল জব্বারের ভূমিকা স্মরণ করেন তারা। এছাড়া কিংবদন্তী এ শিল্পীর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনাও জানান।

এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধে আবদুল জব্বাবের গান মুক্তিযোদ্ধা ও দেশের তরুণ সমাজকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতায় তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার মৃত্যু আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’

বুধবার সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বরেণ্য কন্ঠশিল্পী আবদুল জব্বার। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। কিডনি, হার্ট, প্রস্টেট, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।

অসংখ্য কালজয়ী গানে কন্ঠ দেন আব্দুল জব্বার। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুর সংবাদে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। আরও অনেকের সঙ্গে হাসপাতালে ছুটে যান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

‘আমার মরণ নেই। মরেও বেঁচে থাকব বাংলা গানে। বেহেশতে আমি একা যেতে চাই না। অন্য ভাষাভাষীর সঙ্গে সেখানে আমি কী করব? আমি বাংলার মানুষ, বাংলা গানের সঙ্গেই ওপারেও থাকতে চাই।’ বলেছিলেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী প্রয়াত আব্দুল জব্বার।

‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘ওরে নীল দরিয়া’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় বাংলা গানের গায়ক আব্দুল জব্বার মুক্তিযুদ্ধের সময় হারমোনিয়াম নিয়ে কলকাতার বিভিন্ন ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের গান গেয়ে উদ্বুদ্ধ করেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এই শিল্পীর গাওয়া গান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা ও মনোবল বাড়িয়েছে।

১৯৭১ সালে মুম্বাইয়ে ভারতের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জনমত তৈরিতেও নিরলসভাবে কাজ করেন তিনি। ওই সময় ভারতের বিভিন্ন স্থানে গণসংগীত গেয়ে প্রাপ্ত ১২ লাখ টাকা তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করেছিলেন।

সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আব্দুল জব্বারকে ১৯৮০ সালে একুশে পদক ও ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করে বাংলাদেশ সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, ৩০ আগস্ট ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস

Scroll to Top