যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন চাইল বাংলাদেশ

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী মন্ত্রী এলিস ওয়েলসের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর বৈঠকে এই সমর্থন চাওয়া হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর তিন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে এলিস ওয়েলস মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেন। তিনি আজ বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী মন্ত্রী ও আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান বিষয়ে বিশেষ প্রতিনিধি এলিস ওয়েলস গতকাল দু\’দিনের সফরে ঢাকা পেঁৗছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা সফরের শুরুতেই এলিস ওয়েলস রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, বৈঠকে জ্বালানি ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বিষয়ের ওপর মূল আলোচনা হয়। এ ছাড়া আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। এ সময় রোহিঙ্গা সংকটের প্রসঙ্গটিও আসে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটের বিস্তারিত চিত্র এবং এ বিষয়ে দেশের অবস্থান তুলে ধরেন। রাখাইন রাজ্যে বারবার সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থীর চাপ ক্রমাগত বৃদ্ধি, এর ফলে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে কী ধরনের প্রভাব পড়ছে, সে বিষয়টিও তুলে ধরেন। এ সংকটের স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদারের সক্রিয় সমর্থন প্রয়োজন বলেও তিনি জানান। জবাবে এলিস ওয়েলস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।

সূত্র আরও জানায়, বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হয়। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি ও নিরাপত্তা সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়েও কথা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় এ অঞ্চলে বাংলাদেশের ভূমিকা খুবই প্রশংসনীয় বলে মত দেন। তিনি বলেন, তার এ সফরের উদ্দেশ্য বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া। বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়ন ও অগ্রগতির যাত্রায় যুক্তরাষ্ট্র পাশে রয়েছে ও থাকবে।

বৈঠকে মাহমুদ আলী ১৬ কোটি মানুষের দেশে বাণিজ্যের ভালো সুযোগ থাকার কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বাংলাদেশে বিশেষ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল স্থাপনেরও প্রস্তাব দেন।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এলিস ওয়েলস ব্যবসায়ী নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন। আজ বুধবারই তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন। ঢাকা সফরের পর তার শ্রীলংকার কলম্বোতে ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, ৩০ আগস্ট ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস

Scroll to Top