রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলমান থাকায় আজও বঙ্গভবনের সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। নতুন করে কাঁটাতার বসানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো বঙ্গভবনের আশেপাশে বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
সেনাবাহিনী ও বিজিবির পাশাপাশি সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন র্যাব ও এপিবিএন সদস্যরাও। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে বঙ্গভবনের সামনের রাস্তায় বসানো হচ্ছে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী। চার স্তরের বেষ্টনীর পাশাপাশি রাখা হয়েছে তিন স্তরের কাঁটাতারের বেড়াও। মঙ্গলবার দিন-রাত আন্দোলনের পর আজও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের সামনে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে বঙ্গভবন বা অন্য কোথাও কোনো ধরনের বিক্ষোভ বা আন্দোলনের প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি থাকবেন-কি থাকবেন না এ প্রশ্নটি এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আইনি বা সাংবিধানিক প্রশ্ন নয়। এটি একেবারেই একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।
একইদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শনের পর সাংবাদিকরা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুতে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে এড়িয়ে যান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন গৃহায়ন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর বিকেলে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
সুপ্রিম কোর্টের একাধিক সূত্র জানায়, আধা ঘণ্টার বেশি সময় প্রধান বিচারপতির সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। বৈঠকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয় এবং রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে কে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হবেন সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। দুই উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান বিচারপতি আইজিপি, র্যাব ডিজি ও ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
এদিকে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণের দাবিতে মঙ্গলবার বিকেল থেকে বঙ্গভবনের সামনে আন্দোলন করে বেশ কয়েকটি সংগঠন ও ছাত্রজনতা। রাত ৮টার দিকে তাদের মধ্যে কিছু আন্দোলনকারী বঙ্গভবনের সামনের রাস্তায় গাছের শুকনো ডাল ভেঙে এনে আগুন ধরিয়ে দেন। একাংশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টাও করে। একপর্যায়ে পুলিশের ছোড়া সাউন্ড গ্র্যানেডে সাংবাদিকসহ কয়েকজন আহত হন। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের হামলায় পুলিশের কয়েকজন সদস্যও আহত হন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। বুধবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর।